দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা সামরিক অভিযানে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। টানা দুই রাতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে দেশটির বিভিন্ন শহরে প্রাণহানি ও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েল এখন এক অজানা আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মুখোমুখি।
শনিবার (১৪ জুন) মধ্যরাত থেকে রোববার (১৫ জুন) ভোর পর্যন্ত ইরান দুটি পৃথক ধাপে দ্রুতগতির ব্যালিস্টিক মিসাইল ছুড়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে হামলা চালায়। এই হামলার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল তেল আবিব ও এর পার্শ্ববর্তী বাট ইয়াম শহর। টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, বাট ইয়ামে একটি আবাসিক ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর থেকে অন্তত ৩৫ জন বাসিন্দার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয় সময় অনুযায়ী রোববার সকাল থেকে বাট ইয়ামে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছে জরুরি সেবাদাতা সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবীরা। তবে ভবনটির যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে উদ্ধারকারী দল। এতে উদ্ধার তৎপরতা জটিল হয়ে পড়েছে। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকা পড়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি সেবা সংস্থা ‘মাগেন ডেভিড আদম’ (MDA) জানিয়েছে, রাতভর ইরানের ছোড়া মিসাইল হামলায় অন্তত ২০০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুধু তেল আবিবের ইচিলোভ মেডিকেল সেন্টারেই চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৫ জন, যাদের মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা মাঝারি, বাকিরা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল।
অন্যদিকে হাইফা ও তেল আবিবের অন্যান্য হাসপাতালে আহতদের চাপ বেড়েছে। হাইফার রামবাম মেডিকেল সেন্টার জানিয়েছে, তারা ১৩ জন শারীরিকভাবে আহত রোগী এবং ৮ জন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত (অ্যাংজাইটি আক্রান্ত) ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিচ্ছে। ইচিলোভ হাসপাতাল আরও জানায়, সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত পাঁচজনকে তারা চিকিৎসার জন্য গ্রহণ করেছে।
হামলার ভয়াবহতায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন শহরে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে এবং কিছু এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ের নির্দেশনা পুনরায় চালু করা হয়েছে। তবে নিখোঁজ ৩৫ জনের ভাগ্য এখনও অজানা। ধ্বংসস্তূপের নিচে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসছে।
এই হামলার পর পুরো অঞ্চলজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানালেও পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইরান বারবার হুঁশিয়ার করে বলেছে, তারা আরও হামলা চালাবে, যতক্ষণ না তাদের দাবি অনুযায়ী ন্যায্য প্রতিক্রিয়া অর্জিত হয়।তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল