ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মঙ্গলবার (২৭ মে) দেশটির সবচেয়ে উন্নত স্টিলথ ফাইটার জেট তৈরির একটি কাঠামো অনুমোদন করেছেন। এই পদক্ষেপটি পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবং চীনের দ্রুত বর্ধিত বিমান বাহিনীর মুখোমুখি দাঁড়াতে ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ADA) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রাথমিকভাবে, প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোকে যুদ্ধবিমানটির প্রোটোটাইপ তৈরির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই বিমানটি হবে একটি টুইন-ইঞ্জিন বিশিষ্ট পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার।
এই প্রকল্পটি ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বর্তমানে তাদের বহরে ফরাসি, রাশিয়ান এবং প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি বিমান রয়েছে, যার সংখ্যা ৩১টি, যা অনুমোদিত ৪২টির তুলনায় কম। এদিকে, চীন তার বিমান বাহিনী দ্রুত সম্প্রসারণ করছে। পাকিস্তান ইতোমধ্যে চীনের উন্নত জে-১০ যুদ্ধবিমান তার বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এই মাসের শুরুতে, পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান চার দিনব্যাপী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই সংঘর্ষে উভয় পক্ষই ফাইটার জেট, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং আর্টিলারি ব্যবহার করেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার অস্ত্র প্রতিযোগিতা আরও তীব্র করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই প্রকল্পে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো এককভাবে বা যৌথ উদ্যোগে দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এটি হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL)-এর উপর নির্ভরতা কমাতে এবং বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে।
ভারতের বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং পূর্বে HAL-এর বিরুদ্ধে লাইট কমব্যাট তেজস বিমান সরবরাহে বিলম্বের অভিযোগ তুলেছেন, যা জেনারেল ইলেকট্রিকের ইঞ্জিন সরবরাহে সমস্যা থাকার কারণে হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে।
এই স্টিলথ ফাইটার প্রকল্পটি ভারতের বিমান বাহিনীর আধুনিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার আকাশসীমায় ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হবে।