ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতাদের একের পর এক নারী কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। মধ্যপ্রদেশের এক বিজেপি নেতার রাস্তায় প্রকাশ্যে যৌন মিলনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর এবার উত্তর প্রদেশের মৈনপুরীতে বিজেপি মহিলা মোর্চার শহর সভানেত্রী সীমা গুপ্তের ছেলে শুভম গুপ্ত এর যৌন কেলেঙ্কারীর কমপক্ষে ১৩০টি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, স্ত্রীকে জবরদস্তি ওই ভিডিও দেখাতো সে, ওগুলো না দেখলে অমানুষিক নির্যাতন এবং শারীরিকভাবে বেদম প্রহার করত সেই নরপিশাচ বিজেপি নেত্রীর ছেলে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সমগ্র ভারতজুড়ে।
ইতিমধ্যে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মৈনপুরী পুলিশ শুভম গুপ্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে। শুভম গুপ্তের স্ত্রী শীতল গুপ্ত অভিযোগ করেছেন যে, শুভম তাকে জোরপূর্বক এসব ভিডিও দেখাতেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারা তিনি মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি আরও দাবি করেছেন যে, তার শ্বশুর তাকে মারধরের হুমকি দিয়েছিলেন যৌতুকের দাবীতে। শীতল গুপ্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এই ভিডিওগুলো সে আমাকে জোর করে দেখাতো। এমনকি আমার শ্বশুরও আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেন এবং হুমকি দিতেন।”
শুভম গুপ্তের ১৩০টি যৌনাচারের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর মৈনপুরী পুলিশ জব্দ করেছে তার একাধিক ডিভাইস ও আলামত। পুলিশ জানিয়েছে, পুরো ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে এবং শিগগিরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে ভারতীয় বিজেপি নেতাদের নারী কেলেঙ্কারি এখন যেনো নিত্যদিনের ঘটনা। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা মনোহরলালের খোলা রাস্তায় এক নারীর সাথে যৌনমিলনের দৃশ্য ভাইরাল হওয়ার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বিজেপির নারী নেত্রীর ছেলের এমন কর্মকাণ্ড নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা ভারতকে। প্রশ্ন উঠছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্ব নিয়েও। ইতিমধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে এবং শুভম গুপ্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষসহ নেটিজেনরাও বেশ ক্ষেপেছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে। দিপ্তি শর্মা নামের এক ভারতীয় নারী সামাজিক মাধ্যম ফেইবুকে বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, “যে দলের (বিজেপি) নেতার পরিবার এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে, তারা নীতির কথা বলার অধিকার রাখে না। নরেন্দ্র মোদি একটা দলের দায়িত্ব নিতে পারেনা আর পুরো দেশের দায়িত্ব নিয়ে বসে আছে।’ মধব পান্ডিয়া নামের আরেক ভারতীয় ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘বিজেপি নেতাদের এসব কর্মকাণ্ড দেখে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছি। এদের ঘরে কি মা-বোন নেই? রাজনীতির নামে নারী কেলেঙ্কারি মেনে নেওয়া যায় না।’