ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে ভারত মহাসাগরে একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজের গতিরোধ করে এর দিক পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে ইরানের নৌবাহিনী। শনিবার (১৪ জুন) ইরানের সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ-এর এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে ইরানের ভূখণ্ডে নির্ভুলভাবে প্রবেশে সহায়তা করার লক্ষ্যে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজটি ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করে। পারস্য উপসাগরের দিকে যাওয়ার আগে শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইরানের নৌবাহিনীর গোয়েন্দা ব্যবস্থা জাহাজটিকে শনাক্ত করে। এরপর ড্রোন ব্যবহার করে জাহাজটিকে সতর্ক করা হয় এবং তার গতিপথ পরিবর্তন করতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে, ইসরায়েলকে সহায়তার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির সরকার এক বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে চালানো ইরানি হামলা প্রতিহত করতে সাহায্য করলে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা তাদের ঘাঁটি ও জাহাজ লক্ষ্যবস্তু করা হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সামরিক সংঘাত মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ইরান ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিবে শতাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত ও অনেক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে একই দিন ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের রাজধানী তেহরানে বিমান হামলা চালায়। এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এছাড়া আবাসিক স্থানেও তেল আবিব হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এই হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ একাধিক কমান্ডারসহ ৮০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন শিশু রয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাতে নিজেদের সেনাদলে আহত হওয়ার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। শনিবার (১৪ জুন) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মধ্য ইসরায়েলে গভীর রাতে হওয়া এই হামলা ছিল তাদের ওপর ইরানের পাল্টা আক্রমণের অংশ। আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলোর আঘাতে অন্তত ৭ সেনা আহত হন। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাকে আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিল।