সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এমন একটি তথ্য সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও আইডি থেকে দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ক্যাপশনে দেয়া ওইসব পোস্টে এমন দাবির সূত্র হিসেবে ব্লগপোস্টের একটি লিংকও শেয়ার করা হচ্ছে।
ক্যাপশনে দেয়া ওই পোস্টগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গ্রেপ্তার’ শীর্ষক ক্যাপশনে দেয়া ওই পোস্টগুলোর কমেন্ট বক্সের ঘরে ‘amardeesh247’ নামের একটি ব্লগস্পটের ফ্রি ডোমেইন সাইটের লিংক জুড়ে দেয়া হয়েছে। যেটি মূলত ভুঁইফোড় সাইট বলেই প্রতীয়মান হয়। এছাড়া আমার দেশের আসল ডোমেইনের মতো হলেও ভুঁইফোড় সাইটটির ডোমেইন কিছুটা ভিন্ন।
তবে ব্লগস্পটের ওই সাইটটিতে গত ১২ জুন ‘বৈশ্বিক চাঞ্চল্যের কেন্দ্রস্থল: সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে’ শীর্ষক কথিত একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়, গত ১২ জুন বৈধ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে গ্রেপ্তার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। কর্ণফুলী জেলহাট রোডে অবস্থিত আবদুল হামিদের ব্যক্তিগত ভাড়াবাড়ি থেকে এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে বলেও কথিত ওই সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাধারণত কোনো দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতির মতো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলে গণমাধ্যমগুলোতেও ঢালাওভাবে সে বিষয়ে সংবাদ প্রচার হওয়ার কথা। তবে, দেশের কোনো গণমাধ্যমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোনো সংবাদ প্রচার হতে দেখা যায়নি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো বিশ্বস্ত সূত্রেও এমন দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, বরং কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই ফেসবুকে এমন দাবিটি প্রচার করা হয়েছে। সুতরাং, সোশ্যালে ছড়িয়ে পড়া সাবেক রাষ্ট্রপতির গ্রেপ্তারের তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
উল্লেখ্য, গত ৭ মে দিবাগত রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে আবদুল হামিদ দেশ ছাড়ার ঘটনায় নানা মহলে সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হয়। এর জেরে শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে নিয়োজিত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার ছাড়াও উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শক পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারকেও প্রত্যাহার করা হয়।
তবে সমালোচনা ও বিক্ষোভের মধ্যে গত ৮ জুন দিবাগত গভীর রাতে থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেন আবদুল হামিদ। পরদিন ৯ জুন আবদুল হামিদকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি সে বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ওইদিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো ওয়ারেন্ট না থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।