সাবেক পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সেনাবাহিনী এবং এর জন্য পুরোপুরি সেনাবাহিনীই দায়ী। তিনি অভিযোগ করেন, ২৬তম সংবিধান সংশোধনীর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে সেনাবাহিনী। ইমরান খানের মতে, পাকিস্তান এখন “জঙ্গলের আইন” অনুযায়ী চলছে, যেখানে ক্ষমতাবানরা জবাবদিহিতার বাইরে থাকে।
ইমরানের বোন আলীমা খান জানান, সেনাবাহিনীর প্রতি তার আহ্বান, তারা যেন রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকে এবং তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন—কারো সঙ্গে তিনি কখনোই আপস করবেন না।
ইমরান খান স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, সেনাবাহিনী বা আমেরিকার সঙ্গে আপস করছেন—এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি মনে করেন, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে সেনাবাহিনী, যাতে তার সমর্থকদের মনোবল ভেঙে দেওয়া যায় এবং তার আন্দোলন দুর্বল হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগ চাপে রয়েছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর মামলা বিলম্বিত করছে। এর জবাবে পিটিআই এখন বিচারকদের পাশে দাঁড়িয়ে ন্যায়ের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
ইমরান খান শিগগিরই একটি নতুন আন্দোলনের ডাক দেবেন, যেখানে তিনি ন্যায়বিচার ও নতুন নির্বাচনের দাবি তুলবেন। আদিয়ালা জেলের বাইরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আলীমা খান বলেন, তার ভাই যাদের তিনি চাঁদাবাজ ও স্বৈরশাসক মনে করেন, তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না। প্রয়োজনে সারা জীবন জেলে থাকতে রাজি আছেন তিনি, তবুও আপস করবেন না।
তিনি আরও বলেন, ইমরান খান ইসলামাবাদে জনসমাবেশ ডাকতে চান না, কারণ সেখানে সহিংসতার ঝুঁকি রয়েছে। এর আগে সেনাবাহিনী তার সমর্থকদের হত্যা করেছে। তবে তিনি দেশজুড়ে একটি আন্দোলনের ঘোষণা খুব শিগগিরই দেবেন।
এদিকে, চলতি মাসের শুরুতে ইমরানের দুই ছেলে, কাসিম ও সুলাইমান খান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে তাদের বাবার মুক্তির জন্য সাহায্য চান। লন্ডনে বসবাসকারী কাসিম ও সুলাইমান বলেন, “আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে চাই বা এমন কোনো উপায় খুঁজে পেতে চাই, যার মাধ্যমে তিনি সাহায্য করতে পারেন। কারণ, শেষ পর্যন্ত আমরা শুধু আমাদের বাবাকে মুক্ত করতে চাই এবং তার মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করতে চাই।”
তারা আরও বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আমাদের বার্তা হচ্ছে—যে কোনো সরকার যারা বাকস্বাধীনতা ও প্রকৃত গণতন্ত্রে বিশ্বাস রাখে, তারা যেন আমাদের বাবার মুক্তির দাবিতে আমাদের পাশে দাঁড়ায়, বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা।”
তারা জানান, “তিনি (ইমরান খান) এখন একটি মৃত্যুকক্ষে আছেন, সেখানে আলো নেই, আইনজীবী নেই, চিকিৎসক নেই—তবুও তিনি ভেঙে পড়ছেন না।”
তারা বলেন, একটু খুঁটিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে—তার বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা জানান, প্রকাশ্যে কথা বলার আগে বাবার অনুমতি নিয়েছেন তারা।