ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার জবাবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করেছে ইরান। শনিবার (১৪ জুন) থেকে শুরু এ অভিযানে এরই মধ্যে তিন দফায় কয়েকশ মিসাইল নিক্ষেপ করেছে তেহরান। এ হামলা ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে ইসরায়েলের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এরই মধ্যে ইসরায়েলের রাজধানী জেরুজালেম ও গুরুত্বপূর্ণ শহর তেল আবিবসহ মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে ইরানের কয়েকটি মিসাইল।
শনিবার (১৪ জুন) মধ্যরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ।
জরুরি সেবার বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইরানের সর্বশেষ হামলায় ছোড়া মিসাইল মধ্য ইসরায়েলের একাধিক ভবনে সরাসরি আঘাত হেনেছে।
চ্যানেল-১২ নামে অপর একটি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, যার মধ্যে একটি ইরানি মিসাইল সরাসরি তেল আবিবে আঘাত হেনেছে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার (১৪ জুন) মধ্যরাতে ইরানের এ মিসাইল হামলার পর তেলআবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এ হামলার আগে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। হামলার পর তারা আবারও বিধিনিষেধ তুলে নেয়। তারা জানায়, সাধারণ মানুষ চাইলে এখন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বের হতে পারবেন। তবে, তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থান নিতে এবং হোম ফ্রন্ট কমান্ডের নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপর সারাদিনই দেশটিতে হামলা অব্যাহত রাখে তারা। ভয়াবহ এ হামলায় ইরানের সেনাপ্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারী গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান জেনারেল হোসাইন সালামিসহ অন্তত ২০ জন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ অবস্থায় ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বাহিনীটির নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
দায়িত্ব নিয়েই ইসরায়েলের উদ্দেশে কঠিন হুঁশিয়ারি দেন নতুন আইআরজিসি প্রধান। তিনি বলেন, ইসরায়েলি হামলার জবাবে শিশু হত্যাকারী জায়নবাদী শাসকের জন্য শিগগিরই জাহান্নামের দরজা খুলে যাবে।
নতুন আইআরজিসি প্রধানের এ বার্তার কয়েক ঘণ্টা না যেতেই ইসরায়েলে মিসাইল হামলা শুরু করে ইরান। স্বল্প সময়ের মধ্যে তিন দফায় মিসাইল হামলা চালিয়েছে তেহরান, যেখানে প্রথম দফায়ই ছোড়া হয়েছে শতাধিক মিসাইল। ইরানের এই মিসাইল হামলা শুরু হতেই নিজের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান ও উচ্চপদস্থ মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে মাটির নিচে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।