ইরানের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ছে তেল আবিবসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে। দেশটির আয়রন ডোমসহ কয়েক স্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার যে দম্ভ ছিল তা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে ইরানের নতুন ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘হাজ কাসেম’। নতুন আক্রমণে ‘হাজ কাসেম’-ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজের বরাতে জানিয়েছে সিএনএন
স্থানীয় সময় রোববার (১৫ জুন) ভোররাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে চালানো হামলার সময় এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করছে তেহরান।
এই ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়ে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল আজিজ নাসিরজাদে দেশটির জাতীয় টেলিভিশনে গত ৪ মে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘হাজ কাসেম’ ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের টার্মিনাল হাই অল্টিচিউড এরিয়া ডিফেন্স, প্যাট্রিয়ট এবং ইসরায়েলের ব্যবহৃত অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম।
এই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করে ইরান। দেশটির বার্তা সংস্থা তাসনিমের তথ্য অনুযায়ী, এটির পাল্লা প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার। এতে রয়েছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ন্যাভিগেশন সিস্টেম এবং বৈদ্যুতিক যেকোন প্রতিকূলতা প্রতিহত করার সক্ষমতা।
তাসনিম জানিয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেডটি চালনাযোগ্য, যার মাধ্যমে এটি প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হানতে পারে।
এই ক্ষেপণাস্ত্রটির নামকরণ করা হয়েছে কুদস বাহিনীর সাবেক প্রধান কাসেম সোলাইমানির নামে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ইরাকের বাগদাদে এক ড্রোন হামলায় সোলাইমানি নিহত হন।
ইরানের পক্ষ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের এই দাবি এমন এক সময়ে এল, যখন ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
পাল্টাপাল্টি হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নতুন করে যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ‘হাজ কাসেম’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার শুধু প্রযুক্তির প্রদর্শনী নয়, বরং এটি ইরানের কৌশলগত বার্তা—তারা এখন আরও উন্নত ও আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা সক্ষমতা অর্জন করেছে।