ইরানে ইসরায়েলের হামলার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য তুলে ধরেছেন মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিশ্লেষক ও সেন্টার ফর মিডল ইস্ট স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো আবাস আসলানি।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানি জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে তাদের উত্তেজিত করা। তবে বাস্তবে ঠিক উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
আসলানি বলেন, “ইসরায়েল মনে করছে ইরানিদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে। কিন্তু জনগণ উল্টো জাতীয় পতাকার চারপাশে একত্রিত হচ্ছে এবং আরও জোরালো প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, হামলায় কেবল পারমাণবিক স্থাপনাই নয়, হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকাও লক্ষ্যবস্তু ছিল, যা ইরানিদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য আরও দৃঢ় করেছে।
আসলানি বলেন, “ইরান কয়েক দশক ধরে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা, গুপ্তহত্যা ও নানা চাপের মুখে রয়েছে। তবুও তারা কখনোই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসেনি। বরং এই চাপ তাদের প্রতিরোধ শক্তি আরও বাড়িয়ে তুলেছে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “যেদিন তেহরান চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়ায় যাবে, সেদিন এই অঞ্চলে আরও বড় ধরনের আগ্রাসনের দরজা খুলে যেতে পারে।”
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের একটি সামরিক অভিযান শুরু করে, যার আওতায় ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র, সামরিক ঘাঁটি ও স্ট্র্যাটেজিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। জবাবে ইরান ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ চালু করে, যার মাধ্যমে ইসরায়েলের একাধিক সামরিক ও অবকাঠামো টার্গেটে পাল্টা আঘাত হানা হয়।
এই পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইরানে নাগরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলার কারণে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।