Friday, July 4, 2025

অপেক্ষা করতে করতে হাসপাতালের বারান্দায় ২ নারীর সন্তান প্রসব, নবজাতকের মৃত্যু

আরও পড়ুন

সিলেট ব্যুরো:

সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটেছে। এসময় মারা যায় একটি শিশু। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে থাকা অবস্থায় প্রসব ব্যথা উঠলে চিকিৎসক এবং সেবিকাদের সহযোগিতা চেয়েও না পেয়ে স্বজন এবং অন্যদের সহযোগিতায় ওই দুই প্রসূতি সন্তান জন্ম দেন। এমনকি প্রকাশ্যে হাসপাতালের বারান্দায় সন্তান জন্মদানের সময় ওয়ার্ডের সেবিকাদের কাছে কাপড় চেয়েও পাওয়া যায়নি। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন নারী শাড়ি দিয়ে আড়াল করে রেখেছিলেন।

বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের চাটিবহর গ্রামের শাহিন মিয়ার স্ত্রী সুমি বেগম (১৯) ও গোলাপগঞ্জের দক্ষিণ রামপাশা গ্রামের রতন চন্দ্র দাসের স্ত্রী সুপ্রিতা রানী দাস (২৫) বিকেলে হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় সন্তান প্রসব করেন। এসময় রোগীর স্বজন এবং হাসপাতালে উপস্থিত কয়েকজনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন। তারা দুইজনই এ দিন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে সুমি বেগমের সন্তান জন্মের পরই মারা গেছেন। তারা দুইজনই বর্তমানে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  জুলাই নিয়ে পুলিশের আপত্তিকর পোস্ট, প্রতিবাদে আগুন জালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ

সুমি বেগমের মা রাজিয়া বেগম বলেন, মেয়েকে বুধবার বিকেল তিনটার দিকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম। এরপর প্রসূতি ওয়ার্ডে নিয়ে আসার পর ভেতরে যেতে দেয়া হয়নি। এসময় মেয়ের প্রসব ব্যথা ওঠার পর ওয়ার্ডের ভেতরে যেতে চাইলেও যেতে দেয়া হয়নি। ভেতরে সেবিকাদের খবর দেয়া হলেও বিষয়টি আমলে নেয়া হয়নি। পরে হাসপাতালের বারান্দাতেই অন্যদের সাহায্যে নবজাতকের জন্ম হয়।

তিনি জানান, তার মেয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সন্তান প্রসব করেছেন। সময়ের আগে সন্তান প্রসব এবং হাসপাতালের অসহযোগিতায় তার মেয়ের নবজাতক শিশুটি মারা গেছে। তার মেয়ের সন্তান প্রসব হওয়ার প্রায় ১০ মিনিট পর আরও এক প্রসূতির প্রসব বেদনা ওঠার পর বারান্দাতেই একইভাবে সন্তান প্রসব করেন। ওই প্রসূতিও সন্তান জন্ম নেয়ার সময় কোনও চিকিৎসা সেবা পাননি।

আরও পড়ুনঃ  দুর্গন্ধের কারণ খুঁজতে পুলিশকে খবর, এরপর যা ঘটল

এ ব্যাপারে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টাই রোগী ভর্তি করা হয়। ২৫-৩০ জন প্রসূতি এক সঙ্গে ভর্তির জন্য আসেন। তাদের অনেকের ফলস লেবার পেইন, কেউ ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আসেন। ভর্তির কক্ষে শয্যা আছে ৫টি। সেখানে প্রসূতিদের পরীক্ষা করার পর ভর্তি করা হয়। প্রসূতিদের অবস্থা দেখেই প্রসব করানোর জন্য শয্যা দেয়া হয়।

তিনি বলেন, দুই প্রসূতির ক্ষেত্রে তারা জরুরি অবস্থায় এসেছিলেন। সেখানে ভিড় থাকায় ভেতরে জরুরি অবস্থার বিষয়টি জানা যায়নি। এছাড়া যে কক্ষে পরীক্ষা করা হয় সেটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বাইরের শব্দ ভেতরে পৌঁছায় না।

আরও পড়ুনঃ  নারী নির্যাতন মামলার আসামির সঙ্গে ঘুষ লেনদেন এসআইয়ের, অতঃপর...

চিকিৎসক ও সেবিকারা সেবা দেননি কিংবা সেবা দেয়ার মনোভাব নেই- এমন নয় বলেও দাবি করেন এই পরিচালক।

তিনি আরও বলেন, ৯০০ শয্যার হাসপাতালে তিন হাজারের কাছাকাছি রোগীকে সেবা দেয়া হচ্ছে বিষয়টি বুঝতে হবে।

ওই প্রসূতি দুই নারী সুস্থ রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এক প্রসূতি সময়ের আগেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন এ জন্য শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। মা সুস্থ রয়েছেন। অন্য শিশু ও মা ভালো আছেন। আজ কালকের মধ্যেই তাদের ছাড়পত্র দেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ