Sunday, July 20, 2025

পাথর মেরে হত্যার ঘটনায় ঢাবিতে বিক্ষোভের ডাক

আরও পড়ুন

পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে পিটিয়ে ও মাথা থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শতাধিক মানুষের সামনে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনা দেখা হয়।

নৃশংস এ হত্যার ঘটনায় আজ শুক্রবার (১১ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের।

এর আগে, ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছে তার পরিবার। পরে ২জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে সোহাগকে হত্যা করে তাঁর পূর্বপরিচিতরা। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গতকাল মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিনের কাছে পাওয়া গেছে একটি পিস্তল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দু’জনসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার বাদী নিহতের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম।

আরও পড়ুনঃ  এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিসিএস ক্যাডার হলেন ৬০ জন

আসামিদের মধ্যে মহিন ও রবিন ছাড়াও রয়েছে–সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, মো. নান্নু, সজীব, রিয়াদ, টিটন গাজী, রাজীব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, সিরাজুল ইসলাম, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী ও আনিসুর রহমান হাওলাদার।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কালো প্যান্ট পরা খালি গায়ের এক যুবক সোহাগের মুখে চড় মারছেন। এরপর কালো গেঞ্জি পরা এক যুবক তাঁর বুকের ওপর লাফিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আরও একজন এসে একই কায়দায় আক্রমণ চালান। এর কিছুক্ষণ পর সোহাগের মাথায় লাথিও মারা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও দুর্বৃত্তদের বর্বরতা থেমে থাকেনি। তাকে হাসপাতালের ফটকের ভেতর থেকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ  মাঠে নামছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

হাসপাতাল চত্বরে শতাধিক পথচারী ও রোগীর স্বজন এই দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। আশপাশেই আনসার ক্যাম্প থাকলেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেউ ঘটনাস্থলে হস্তক্ষেপ করেননি। হামলাকারীদের একজনকে ভিডিওতে উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ্য করে হাত উঁচিয়ে চিৎকার করে কিছু বলতে শোনা যায়।

মামলার এজাহারে বাদী বলেছেন, সোহাগ দীর্ঘদিন ওই এলাকায় ব্যবসা করায় ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয়সহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আসামিদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে তারা সোহাগের গুদাম তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে এলাকাছাড়া করতে নানারকম ভয় দেখিয়ে আসছিল। এরপর বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করে। তাঁকে মারধর করতে করতে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের ভেতরে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে রড, লাঠি, সিমেন্টের ব্লক বা ইট দিয়ে আঘাত করে। মারতে মারতে তাঁকে বিবস্ত্র করে ফেলে। এক পর্যায়ে সোহাগ নিস্তেজ হয়ে ড্রেনের পাশে লুটিয়ে পড়েন। তখন তাঁর নিথর দেহ টেনে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

আরও পড়ুনঃ  আঙ্গুল উঁচিয়ে ভিসিকে শিক্ষার্থী—‘স্যার, আপনি নিজের যোগ্যতায় আসেননি, আমরা বসাইছি’, কী সাংঘাতিক!

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঘটনাটি গত বুধবারের। কয়েকজন মিলে প্রকাশ্যে একজন ব্যক্তিকে পাথর মেরে হত্যা করেন। এ ঘটনায় থানায় ১৯জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাকি আরও কয়েকজন অজ্ঞাত রয়েছে। আসামীদের মধ্যে আমরা ২জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা এখন রিমান্ডে আছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ