স্মার্টফোন এখন সবার হাতের নাগালে। অবসর পেলেই অনেকেই ফোনে গেম খেলেন, সিনেমা-ওয়েব সিরিজ দেখেন কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করেন। এই অভ্যাস টয়লেটেও নিয়ে যান অনেকেই। ফলে টয়লেটে বসে ফোন ব্যবহার করতে করতে অজান্তেই কেটে যায় অনেকটা সময়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টয়লেটে দীর্ঘ সময় কাটানোর এই অভ্যাস শরীরের জন্য ভয়ংকর ঝুঁকি তৈরি করে।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞদের দাবি, এ অভ্যাসের জন্য অল্প বয়সেই অর্শ, কোষ্ঠকাঠিন্য, মূত্রাশয়ের সমস্যা ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অর্শ ও কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি
ভারতীয় ডায়েটিশিয়ান সোনিয়া নারাং জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় টয়লেটে বসে থাকলে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। এতে রক্ত জমাট বেঁধে মলদ্বারের শিরা ফেঁপে ওঠে, যা অর্শ বা হেমোরয়েডসের কারণ হতে পারে। আবার মলত্যাগে দেরি হলে অন্ত্রে চাপ জমে মল শক্ত হয়ে যায়। এর ফলেই কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে হজমজনিত জটিলতা বাড়ায়।
পেলভিক ফ্লোর দুর্বল হওয়ার আশঙ্কা
সোনিয়া বলেন, বেশি সময় টয়লেটে বসে থাকার কারণে পেলভিক ফ্লোরের পেশিতে চাপ পড়ে। এই পেশিগুলোই মলদ্বার ও মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণ করে। পেশি দুর্বল হয়ে গেলে প্রস্রাব জমে থাকা, মলত্যাগে অসুবিধা কিংবা দাঁড়ানোর সময় হঠাৎ প্রস্রাব বেরিয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। যা ভবিষ্যতে কিডনির ওপরও প্রভাব ফেলে।
জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ফ্লাশ করার সময় অসংখ্য জীবাণু বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। হাতে ফোন থাকলে সহজেই সেগুলো ফোনে লেগে যায়। যেহেতু ফোন বারবার হাতে নেওয়া হয়, সেখান থেকে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
কী করবেন?
সোনিয়া নারাং জানান, টয়লেটে পাঁচ মিনিটের বেশি সময় ব্যয় করা উচিত নয়। মলত্যাগের চাপ আসলে দেরি না করে টয়লেট শেষ করা দরকার। আর ফোন, বই কিংবা পত্রিকা নিয়ে টয়লেটে বসার অভ্যাস বাদ দিতে হবে। পাশাপাশি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।