Monday, August 25, 2025

সরকারি নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকার বিষয়ে নতুন পরিপত্র জারি

আরও পড়ুন

সরকারি চাকরির নিয়োগপ্রক্রিয়া সহজ করতে ১০-১২তম গ্রেডের নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা রাখা বাধ্যতামূলক করে পরিপত্র জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত পরিপত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পরিপত্র অনুযায়ী, প্রতিটি পদের বিপরীতে দুজন প্রার্থীকে অপেক্ষমাণ রাখা হবে।

মূল তালিকা থেকে কেউ চাকরিতে যোগ না দিলে বা যোগ দেওয়ার পর কেউ চাকরি ছাড়লে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এই তালিকার মেয়াদ থাকবে এক বছর।

এর আগে সরকারি চাকরির ১৩-২০তম গ্রেডের নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা সংরক্ষণের নিয়ম রেখে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

নতুন পরিপত্র জারি হলে ১০-২০তম গ্রেডের সব নিয়োগেই অপেক্ষমাণ তালিকা রাখতে হবে। বিসিএস কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয় ৯ম গ্রেডে।

কর্মকর্তারা বলছেন, ১০-২০তম গ্রেডের নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা রাখা হলে কোনো দপ্তরে দীর্ঘদিন পদ ফাঁকা থাকবে না। নিয়োগপ্রার্থীদেরও বারবার আবেদন করতে হবে না। এর ফলে সরকার ও প্রার্থীদের খরচ কমবে।

অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগ বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পদের বিপরীতে নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের সুপারিশ করা হবে। এরপর নিয়োগ পরীক্ষার মেধাক্রম অনুযায়ী প্রতিটি পদের জন্য দুজন করে প্রার্থীর নাম ও রোল নিয়োগ কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষরে সিলগালাকৃত খামে গোপনভাবে অপেক্ষমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে।

আরও পড়ুনঃ  সব নির্বাচনে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী, থাকবে ম্যাজিস্ট্রেসি ও পুলিশি ক্ষমতাও

অপেক্ষমাণ তালিকার মেয়াদ হবে নিয়োগের সুপারিশ দেওয়ার দিন থেকে এক বছর। তবে কোনো কারণে এর মধ্যে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে অপেক্ষমাণ তালিকা আর কার্যকর থাকবে না।

তবে জরুরি না হলে একটি নিয়োগ দেওয়ার এক বছরের মধ্যে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাবে না।

কোনো পদ ফাঁকা হলে অপেক্ষমাণ থাকা প্রার্থীদের পরীক্ষার ফল উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট নিয়োগ কমিটি নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে।

এরপর ওই দপ্তরের নোটিশ বোর্ড এবং ওয়েবসাইটে প্রার্থীর নাম ও রোল প্রকাশ করা হবে। নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব অপেক্ষমাণ তালিকার মেধা তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রার্থীকে মোবাইলে ফোন করে এবং এসএমএস দিয়ে নিয়োগের বিষয়টি জানাবেন। এরপর রেজিস্ট্রি ডাকে চিঠিও পাঠানো হবে।

আরও পড়ুনঃ  শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ফল প্রকাশ, দেখবেন যেভাবে

চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রার্থী যোগাযোগ না করলে পরের মেধাক্রমে থাকা প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য ডাকা হবে।

পরিপত্রের অনুযায়ী, অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে যারা নিয়োগ পাবেন তাদের জ্যেষ্ঠতা প্রথম নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীদের পরে নির্ধারিত হবে। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে একই দিনে একাধিক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হলে নিয়োগ পরীক্ষার মেধাক্রম অনুযায়ী তাদের জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে। নিয়োগ পরীক্ষায় একই নম্বর পেলে বয়সের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে। কোনো কারণে বয়সও একই হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের শিক্ষাবর্ষের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে।

কোনো সরকারি দপ্তরের যে পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে, শুধু ওই সব পদে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া যাবে। বিজ্ঞাপিত পদের বাইরে একই দপ্তরের অন্য কোনো পদে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলে পরিপত্রের বলা হয়েছে।

সহজেই সরকারি চাকরির শূন্য পদ পূরণ করতে বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও যাদের ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় না, তাদের মধ্য থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এরপরও সরকারি চাকরির ফাঁকা পদ পূরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি দপ্তরগুলোকে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও এখন ৫ লাখের মতো পদ শূন্য রয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ব্রেকিং নিউজ: পেঁয়াজ নিয়ে সুখবর

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা রাখলে চাকরিপ্রার্থীরা ভালো সুবিধা পাবেন। একজনকে একই দপ্তরে বারবার আবেদন করতে হবে না। এতে সরকারের খরচ বাঁচবে এবং সহজেই ফাঁকা পদ পূরণ করা যাবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০২৩ সালের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ আছে ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৫১৯টি। এর মধ্যে খালি আছে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ১টি পদ। ১ম-৯ম গ্রেডের ২ লাখ ৫৬ হাজার ৮২৬টি পদের মধ্যে ফাঁকা আছে ৬৫ হাজার ৮৯৮টি। আর ১০-২০তম গ্রেডে ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৩টি পদের মধ্যে খালি আছে ৪ লাখ ৭ হাজার ১০৩টি। অর্থাৎ ১ম-৯ম গ্রেডের ২৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং ১০ম-২০তম গ্রেডে ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ পদ ফাঁকা আছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ