Wednesday, August 27, 2025

পুলিশ ক্যাম্পে হামলা: দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি, এলাকায় উত্তেজনা

আরও পড়ুন

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্মূলের লক্ষ্যে জামালপুর গ্রামে সদ্য সচল হওয়া পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে স্থানীয় নৌ-ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় তুমুল গোলাগুলি হয়। পরে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেল ৫টার পর উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষ থেকে প্রায় শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও চার থেকে পাঁচটির বেশি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ইউনিয়নটিতে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার বিকেল ৫টার পর পর পাঁচ থেকে ছয়টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ-ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। ক্যাম্পের কাছাকাছি জায়গায় এসে প্রথমে চার থেকে পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

আরও পড়ুনঃ  দুই পত্রিকার বিরুদ্ধে ভুয়া ছবি ছড়িয়ে সম্মানহানির অভিযোগ জারার

পরে ট্রলার থেকে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০ রাউন্ড এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়।

প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ট্রলার নিয়ে মতলবের দিকে পালিয়ে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, স্থানীয় ডাকাত পিয়াসের নেতৃত্বে পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রলার নিয়ে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ জন নৌ-ডাকাত পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সন্ত্রাসীরা চার থেকে পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে আমরাও পজিশন ঠিক করে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে গুলি করতে থাকি। আমাদের দিক থেকে ১৯ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের কোনও পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। তবে কোনও সন্ত্রাসী আহত হয়েছে কি না তা আমি বলতে পারবো না।

আরও পড়ুনঃ  সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের ‘শেষ লেখা’ ভাইরাল, যা লিখেছেন

বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, নৌ-ডাকাতরা সম্ভবত চাঁদা তোলার উদ্দেশে নদীতে নেমেছিল। পুলিশ থাকার কারণে তারা সুবিধা করতে পারেনি। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কোনও পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামনে আরও কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে সক্রিয় কয়েকটি নৌ-ডাকাত দল। অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক মাসে নৌ-ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও লালু বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা, শুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘসহ আরও বেশ কয়েকজন।

আরও পড়ুনঃ  অপহরণকারীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে আসার ঘটনা বর্ণনা করলেন মাহিরা

ওই এলাকায় নৌ-ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে গত শুক্রবার (২২ আগস্ট) ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। এদিকে প্রথম থেকে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল নৌ-ডাকাত গ্রুপগুলো।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ