Thursday, November 13, 2025

মক্কায় ১২৫ কিমি এলাকাজুড়ে স্বর্ণের খনির সন্ধান

আরও পড়ুন

সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা অঞ্চলে আবিষ্কৃত হয়েছে বিশাল এক সোনার খনি। প্রায় ১২৫ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত এই খনিজভাণ্ডারকে দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ আবিষ্কার হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে। মানসুরা–মাসারাহ সোনার খনির দক্ষিণে পাওয়া এই নতুন সোনার খনি ইতোমধ্যেই সৌদি অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। খবর দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের।

রাষ্ট্রীয় খনিজ কোম্পানি ‘মাআদেন’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে প্রায় ১০০ কিলোমিটারজুড়ে উচ্চমাত্রার সোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা গেছে। পরীক্ষাগারে নেওয়া নমুনায় দেখা গেছে, প্রতি টন মাটিতে সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৬ গ্রাম পর্যন্ত সোনা পাওয়া গেছে—যা আন্তর্জাতিক মানে ‘অত্যন্ত সমৃদ্ধ’ ধরা হয়।

আরও পড়ুনঃ  নয়াদিল্লিকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ

মাআদেনের প্রধান নির্বাহী রবার্ট উইলে বলেন, ‘এই নতুন আবিষ্কার মক্কাকে বৈশ্বিক সোনার মানচিত্রে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এটি শুধু অর্থনৈতিক নয়, প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রেও এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।’

বর্তমানে মানসুরা–মাসারাহ খনিতে প্রায় ৭০ লাখ আউন্স সোনা মজুত আছে এবং প্রতিবছর এখান থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার আউন্স সোনা উত্তোলন করা হয়। নতুন আবিষ্কারের ফলে উৎপাদন বহুগুণে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো অঞ্চলজুড়ে ১২৫ কিলোমিটারব্যাপী এক ‘গ্লোবাল গোল্ড বেল্ট’ বা আন্তর্জাতিক মানের স্বর্ণপট্টি গড়ে উঠতে পারে।

এই সোনার খনি আবিষ্কার সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে খনিজ, প্রযুক্তি ও শিল্পখাতকে অর্থনীতির নতুন চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে।

আরও পড়ুনঃ  ‘ভারতীয় প্রক্সি বাহিনীর’ ঘাঁটিতে পাক বাহিনীর ভয়াবহ হামলা, নিহত ১৪

সৌদি শিল্প ও খনিজসম্পদমন্ত্রী বান্দার আলখোরাইফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের খনিজ খাত এখন বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল সেক্টরগুলোর একটি। এই নতুন সোনার খনি আবিষ্কার সৌদি অর্থনীতির বৈচিত্র্যকরণের যাত্রায় ঐতিহাসিক মাইলফলক হয়ে থাকবে।’

মাআদেন আরও জানিয়েছে, মক্কার কাছাকাছি ওয়াদি আল-জাও ও জাবাল শাইবান অঞ্চলেও নতুন সোনা ও তামার ভাণ্ডার আবিষ্কৃত হয়েছে, যা ভবিষ্যতে বড় আকারের খনন কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি করবে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই নতুন খনি হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করবে এবং বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে। এতে সৌদি আরব আন্তর্জাতিক সোনার বাজারে আরও শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ  প্রেমিকাকে বিয়েতে আপত্তি, দ্বিতীয় স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্বর্ণের মজুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে (৮,১৩৩.৫ টন)। এর পরেই রয়েছে জার্মানি (৩,৩৫১ টন), ইতালি (২,৪৫১.৮ টন), ফ্রান্স (২,৪৩৭ টন) ও রাশিয়া (২,৩৩২.৭ টন)। বিশ্লেষকদের ধারণা, সৌদি আরবের এই নতুন স্বর্ণভাণ্ডার বৈশ্বিক স্বর্ণবাজারে নতুন প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক দামে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ