Thursday, November 13, 2025

১০ বছর আগে ভাবিকে গলাকেটে হত্যা, এবার ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা

আরও পড়ুন

ভাবিকে গলাকেটে হত্যার ১০ বছর পর এবার ছয় বছর বয়সী ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে হাবিব ওরফে হাবিল খাঁন নামের এক ব্যক্তি। বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ইদুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত হাবিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে নিহত শিশুর বাবা মো. দুলাল খান বাদী হয়ে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত হাবিব ওরেফে হাবিল খান মামলার বাদী দুলাল খানের আপন ছোট ভাই হওয়ায় তারা একই বাড়িতে বসবাস করতেন। তবে হাবিব সার্বক্ষণিক নেশাগ্রস্থ থাকায় প্রায় সময়ই পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ করাসহ মারধর করতেন। ঘটনার দিন মঙ্গলবার দুপুরে শিশু নাহিল বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকানে রুটি কিনতে যায়। এ সময় হঠাৎ হাবিব পিছন থেকে এসে একটি লাঠি দিয়ে নাহিলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এতে শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক বাবা দুলাল খান ও স্বজনেরা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। শিশুটি আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকায় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে শিশুটি মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুনঃ  ‘ওড়না কোথায়’ বলে তরুণীকে হেনস্তা, ভিডিও ভাইরাল

ঘটনার পরপরই চাচা হাবিব ওরেফে হাবিলকে স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করে। এ সময় হাবিল একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। হাবিল খান এ ঘটনার আগে ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে তার বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা করে। ওই মামলায় শিশু আইনে তার ৯ বছর সাজা হয়। সাজা ভোগ শেষে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পান। ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পরে ঘাতক হাবিল বড় ভাই দুলাল খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যা নাহিলকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

আরও পড়ুনঃ  চাঁদাবাজির সময় আটককৃতদের ছিনিয়ে নিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর হামলা

শিশুর বাবা দুলাল খান কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছে। তখন ওর বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে ৯ বছর সাজা ভোগ করে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জামিনে মুক্তি পায়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার দেড় বছরের মাথায় আমার শিশুকন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমার শিশুকন্যা কী অপরাধ করেছিল? আমি এর বিচার চাই।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. টুকু শিকদার ও সালাম হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা হাবিলকে ধাওয়া করলে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা আরও বলেন, হাবিল এর আগে তার ভাইয়ের প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছেন।’

আরও পড়ুনঃ  দফায় দফায় সংঘর্ষ-ভাঙচুর, হাসপাতালে ২০ জনকে ভর্তি

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির মাথার ডান পাশে এবং বাঁ হাতের কনুইয়ে গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। তাৎক্ষণিক শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে জানা যায়, শিশুটি বরিশালে নেয়ার পথেই মারা গেছে।’

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ‘হাবিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ ময়নাতন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ