টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ১৭ বছর বয়সী এক মেয়ে রাতারাতি মেয়ে থেকে ছেলেতে রূপান্তরিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হচ্ছে। বিষয়টি দেখতে প্রতিদিন উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন।
তবে পরিবারের দাবি, একটি মাজারে ঘুরতে গিয়ে মাজার নিয়ে কটূক্তি ও অবমাননা করায় মেয়ে থেকে ছেলেতে রুপান্তর হয়। সদ্য ছেলে হয়ে যাওয়া রাফিকে এক নজর দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মানুষ।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, হরমন জনিত কারণে সমাজে নারী পুরুষের মতো আচরণ বা পুরুষের নারীদের মতো আচরণ একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তবে সম্পন্ন রূপে মেয়ে থেকে ছেলে হওয়ার ঘটনা বিরল। এমনি অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের ধলাপাড়া ইউনিয়নের পোড়াবাসা, খান মোড় এলাকায়। এমন অলৌকিক ঘটনায় পরিবার প্রথমে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়লেও বর্তমানে তারা খুশি। সমাজও রাফিকে ছেলে হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
স্থানীয়রা বলেন, ১৭ বছর ধরে সে মেয়ে ছিলেন। স্থানীয় বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ে মেয়ে হিসেবেই পাস করেছেন রুমি আক্তার নামেই। হঠাৎ একরাতের মধ্যে শারীরিক পরিবর্তন হয়ে ছেলেদের আচরণ করছে। বিষয়টি তিনি লজ্জার কারণে এক বছর গোপন রাখলেও একপর্যায়ে তার পরিবর্তনের বিষয়টা সবার নজরে আসে এবং ছেলেতে রূপান্তরিত হওয়ার বিষয়টি সকলের কাছে এখন স্বাভাবিক। এমন বিরল ঘটনা এলাকার মানুষ আগে কখনো দেখেনি। মেয়ে থেকে ছেলে রুপান্তর হওয়া রাফি যদি সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হন তাহলে এ ঘটনাটি ইতিহাসের পাতায় বিরল ঘটনার সাক্ষী হয়ে হয়ে থাকবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
রাফি বলেন, একবছর পূর্বে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিনের মত ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ঘুম ভাঙার পর নিজের শরীরের পরিবর্তন বুঝতে পারেন। ভয়ে তার শারীরিক পরিবর্তনের বিষয়টি গোপন রাখেন। এর মধ্যে তার সহপাঠীরা ছেলে হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বুঝে ফেলার চিন্তায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। দুইমাস পূর্বে পরিবার বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক করলে পরিবারকে ছেলে হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি জানান। পরিবার বিশ্বাস না করায় রাফির নানাকে তার গোপনাঙ্গ দেখায়। এরপর থেকেই ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তার ইচ্ছে সমাজ ও দেশবাসী তাকে স্বীকৃতি। প্রবাসে যাবেন পরে দেশে এসে বিবাহ করবেন বলে জানান।
রাফির বাবা বলেন, ‘তার ৩ সন্তান রয়েছে এর মধ্যে দুইটি মেয়ে ও একটি ছেলে। তার ছোট মেয়ের নাম ছিল রুমি। এদের মধ্যে ১৭ বছর বয়সী রুমি বছরখানেক আগে পার্শ্ববর্তী সখীপুরের ফাইল্যা পাগলার মাজারে ঘুরতে গিয়ে সেই মাজারকে অবহেলামূলক কথাবার্তা বলে। পরে ওদিন রাতে খাওয়া-ধাওয়া শেষে ঘুমিয়ে পড়ে এবং সকালে ওঠে বুঝতে পারে মেয়ে থেকে ছেলেতে রুপান্তি হয়। এর আগে ওর বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল। ঘটনার দিন সকালে জানায় তার এমন ঘটনা। পরে ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তার নাম রাখা হয় রাফি আহমেদ নিলয়। এখন আল্লাহ পাক এমন তৈরি করেছেন, সে নামাজ পড়ছে, সমাজিরা মানছে, ছেলে হওয়ায় খুশি তিনি। রাফিকে বিয়ে করানোর জন্য মেয়ে দেখছেন।’
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টে দেখা গেছে ঘটনাটি আসলে সত্য। এটি হরমন জনিত কারণে হয়ে থাকে এবং ঘটনাটি স্বাভাবিক। তাকে আরও টেস্ট দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলে জানা যাবে তিনি সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম হবে কি না।