সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশের অনুমতি দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনটি বলছে, এই অনুমতির মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কালিমা লেপন করেছে। ২০২৪ সালের ৮ই আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তাদের বিরাগ জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুলাই) সংগঠনটির একাংশের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের স্মারক। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর গণহত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্র সংঘ (বর্তমানে ইসলামী ছাত্র শিবির), নেজামে ইসলাম, রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী তাদের পরাজয় স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেছিল। অথচ আমরা দেখলাম স্বাধীন বাংলাদেশে এই প্রথম গণহত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে আজ (১৯ জুকাই, ২০২৫) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ড. ইউনুস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
তারা বলেন, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে কালিমা লেপন করেছে। ২০২৪ সালের ৮ই আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি তাদের বিরাগ জনগণের সামনে স্পষ্ট হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বীরশ্রেষ্ঠদের ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্যসমূহ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বিকারভাবে চেয়ে থেকে তা দেখেছে। আমরা দেখেছি পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি লাগাতার আক্রমণের অংশ হিসেবেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল মানুষকে পতিত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের দোসর হিসেবে ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এবং সেই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার প্রচেষ্টার হিসেবেই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। তারই অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করার দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এড়াতে পারবে না। আমরা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ ও তার প্রকৃত চেতনা থাকবে। মহান মুক্তিযুদ্ধকে কেউ মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তার পরিণতি সুখকর হবে না। বাংলার প্রগতিশীল, প্রকৃত গণতন্ত্রকামী ছাত্র-জনতা পূর্বের রাজাকারদের ন্যায় নব্য রাজাকারদেরও প্রতিহত করবে।