দক্ষিণ চীন সাগরে সৃষ্ট একটি ঘূর্ণিঝড় দক্ষিণ চীনের দিকে প্রবল বেগে অগ্রসর হচ্ছে। টাইফুন উইফা নামে ঘূর্ণিঝড়টি আগামী রোববার (২০ জুলাই) নাগাদ গুয়াংডং ও হাইনান প্রদেশের মধ্যে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
চীনের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ ন্যাশনাল মেটিওরোলজিকাল সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় উইফাকে আজ শনিবার (১৯ জুলাই) দক্ষিণ চীন সাগরে ১৯.৯° উত্তর অক্ষাংশ এবং ১২০.২° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এটা এখন ঘণ্টায় ১৫-২০ কিমি বেগে অগ্রসর হচ্ছে। এটা চলতি বছরের ষষ্ঠ ঘূর্ণিঝড়।
জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ শনিবার সকাল ১০টায় ‘ইয়েলো অ্যালার্ট’ জারি করেছে, যা চার-স্তরের ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা ব্যবস্থার মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ তীব্র সতর্কতা।
আবহাওয়া বিভাগ পূর্বাভাস দিয়েছে, টাইফুন উইফা পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমে ঘণ্টায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার বেগে অগ্রসর হবে এবং রোববার (২০ জুলাই) দিনের শেষের দিকে গুয়াংডংয়ের শেনজেন এবং হাইনানের ওয়েনচাংয়ের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানবে।
ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার পর এর বাতাসের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩৩ থেকে ৪২ মিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টাইফুন বা তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
প্রস্তুতি হিসেবে হাইকোর মিলান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শনিবার দুপুর নাগাদ তিনটি ফ্লাইট বাতিল করেছে। তবে ৫১৫টি নির্ধারিত ফ্লাইটের বেশিরভাগের জন্য স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রেখেছে।
সমুদ্র কর্তৃপক্ষ শনিবার রাত ৯টা ৩০ মিনিট থেকে হাইকোর তিনটি বন্দর থেকে ফেরি পরিষেবা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে রোববার ও মঙ্গলবার (২২ জুলাই) কিছু ক্রস-স্ট্রেইট ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) সমস্ত পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
শনিবার রাত থেকে মঙ্গলবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত হাইনানের অনেক এলাকা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, যার ফলে ধানের ফসলের বন্যার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতি কমাতে কৃষকদের দ্রুত ক্ষেত নিষ্কাশনের আহ্বান জানিয়েছেন।
ফিলিপিন্সে আবহাওয়াবিদরা এক পূর্বাভাসে বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় উইফা (ফিলিপিন্সে ক্রাইসিং নামে ডাকা হচ্ছে) দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর কারণে আরও তীব্রতর হয়ে উঠছে। এমন অবস্থায় বাসিন্দাদের উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত এবং সম্ভাব্য তীব্র আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফিলিপিন্সের আবহাওয়া বিভাগ পাগাসা ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের আগামী ৭২ ঘন্টার জন্য বিশেষ করে শহরাঞ্চল বা নিম্নাঞ্চলে সম্ভাব্য বন্যা এবং ভূমিধসের জন্য সতর্ক থাকতে বলেছে। পাগাসার তথ্য মতে, শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ক্রাইসিংকে মূল ভূখণ্ডের কাগায়ান-বাবুয়ান দ্বীপপুঞ্জ এলাকার কাছাকাছি যেতে দেখা গেছে।