Monday, July 21, 2025

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্কে বেরিয়ে এলো নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য!

আরও পড়ুন

সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের যেসব প্রভাবশালী ব্যক্তি ঢাকায় তদন্তের মুখে পড়েছেন, তাদের অনেকে গত এক বছরে যুক্তরাজ্যে তাদের সম্পত্তি বিক্রি, হস্তান্তর কিংবা পুনঃঅর্থায়ন করেছেন। দ্য গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এক যৌথ অনুসন্ধানে এমনই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটাতে বাংলাদেশে যখন ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়, তখন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে শত শত বিক্ষোভকারী প্রাণ হারায়। এরপর হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্য গা ঢাকা দেন। কেউ কেউ পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে।

গত মে মাসে ব্রিটেনের ‘এফবিআই’খ্যাত জাতীয় অপরাধ দমন সংস্থা (এনসিএ)—সালমান এফ রহমান পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের সম্পদ জব্দ করে। গার্ডিয়ানের আগের এক অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যে এ পরিবারের সম্পত্তির বিশদ তথ্য প্রকাশ পেয়েছিল। এছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরির ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদও জব্দ করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ছাদে খেলতে গিয়ে গুলি লেগে রিয়ার মৃত্যু, ১১ মাস পর মামলা

গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের অনুসন্ধানে দেখেছে, গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েকজন বাংলাদেশি তাদের যুক্তরাজ্যের সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে ঢাকায় তদন্ত চলছে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের জমি নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় তদন্তাধীন ব্যক্তিদের মালিকানাধীন সম্পত্তি সম্পর্কিত অন্তত ২০টি ‘লেনদেনের আবেদন’ গত এক বছরে জমা পড়েছে। এ ধরনের নথিপত্র সাধারণত বিক্রয়, হস্তান্তর বা বন্ধকের বিষয়টিই নির্দেশ করে।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে দুদক। এই দুই ব্যক্তি গত এক বছরে একাধিক সম্পত্তি লেনদেনে যুক্ত ছিলেন।

একজন হচ্ছেন সাইফুজ্জামানের ভাই আনিসুজ্জামান এবং অন্যজন যুক্তরাজ্যভিত্তিক একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি সম্পত্তি ব্যবসায়ী, যার নাম গার্ডিয়ান প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  পদ্মা সেতু নির্মাণে মোবাইলে সারচার্জ বন্ধের দাবিতে রিট

আরও পড়ুনঃ ৪ ছেলেকে নিয়ে ট্রেনের নিচে মাথা দিলেন বাবা
আনিসুজ্জামান চৌধুরীর নামে থাকা চারটি সম্পত্তি নিয়ে সাম্প্রতিক বাজার তৎপরতার তথ্য পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে গত জুলাইয়ে সেন্ট্রাল লন্ডনের রিজেন্টস পার্কের পাশে ১ কোটি পাউন্ড মূল্যের একটি জর্জিয়ান টাউন হাউস বিক্রি হয়েছে। এর পর থেকে আরও তিনটি আবেদন জমা পড়েছে। এগুলো পুনঃঅর্থায়ন সম্পর্কিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আনিসুজ্জামান চৌধুরীর আইনজীবীরা বলছেন, তার সম্পত্তি জ ব্দের কোনো বৈধ কারণ তারা দেখেন না। আর রিজেন্টস পার্কের সম্পত্তি বিক্রির চুক্তি ২০২৩ সালে অভ্যুত্থানের আগে হয়েছিল।

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বৃহৎ বেসরকারি ব্যাংক ইউসিবির চেয়ারম্যান এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুরোধ করেছিলেন—তারা যেন তদন্ত করে দেখেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরী লন্ডনভিত্তিক এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীকে অনিয়মিতভাবে ঋণ পেতে সহায়তা করেছিলেন কি না।

আরও পড়ুনঃ  বোরকা পরে অপু বিশ্বাসের আত্মসমর্পণ, যত টাকা মুচলেকায় মিলল জামিন

এ বছর, বাংলাদেশের একটি আদালত ওই ব্যবসায়ীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে তিনি যেকোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এদিকে আরও তিনটি সম্পত্তি লেনদেনের আবেদন জমা পড়েছে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের মালিকানাধীন সম্পত্তির ক্ষেত্রে। বেক্সিমকো গ্রুপের শীর্ষ নির্বাহী এই দুই ব্যক্তিও বর্তমানে দুদকের তদন্তের আওতায় রয়েছেন।

তাদের মালিকানাধীন সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে মেফেয়ারের গ্রোসভেনর স্কয়ারে অবস্থিত ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, যা গত মাসে এনসিএ ফ্রিজ করে দিয়েছে।

রহমান পরিবারের আইনজীবীরা বলেছেন, তারা কোনো অনিয়ম করেননি। বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক অস্থিরতার’ কারণে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে এবং তারা যুক্তরাজ্যে যেকোনো তদন্তে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ