ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের দাবি-আপত্তির শুনানি চলাকালে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনায় বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আতাউল্লাহ। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ বিষয়ক আপীলকারী।
রোববার (২৪ আগস্ট) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর দায়ের করা অভিযোগে আতাউল্লাহ বলেন, নির্বাচন কমিশন আমার নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পূণনির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেখানে বিজয়নগর উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংযুক্ত করলে এলাকাবাসী সংক্ষুব্ধ হয়। তাদের অনুরোধে এবং তাদের পক্ষে আমি নির্বাচন কমিশনে সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে আপত্তি দাখিল করি। এরপর থেকেই বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানার ক্যাডাররা আমাকে আপত্তি সংক্রান্ত শুনানিতে অংশ না নেয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দেন।
তিনি বলেন, আমি ও আমার এলাকার প্রতিনিধিগণ আজ নির্ধারিত শুনানিতে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে আসলে আপনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আমাকে শুনানিস্থলে প্রবেশে বাধা দেয়। পরবর্তীতে আমি শুনানি শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে প্রবেশ করতে সক্ষম হই। এমতাবস্থায় আপনার এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারগণদের উপস্থিতিতে রুমিন ফারহানার সন্ত্রাসী বাহিনী আমিসহ আমার নির্বাচনী এলাকার নেতৃবৃন্দদের মারধর করে। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে থাকলো।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, স্বৈরাচারী হাসিনার শাসনামলেও নির্বাচন কমিশনে কমিশনারদের সামনে কেউ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে এমন নজির নেই। এর মাধ্যমে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতাও প্রমাণিত হলো, এবং একটি জাতীয় নির্বাচনে আপনারা কী ভূমিকা পালন করতে পারবেন তার একটি পরীক্ষা হয়ে গেলো। উল্লেখ্য ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, রুমিন ফারহানার সন্ত্রাসী ক্যাডাররা যখন আমিসহ এনসিপি নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা চালাচ্ছিল, তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারগণ নিবৃত্তচিত্তে গালে হাত দিয়ে মঞ্চে বসা ছিলেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, প্রায় দুই হাজার শহীদ ও ৩০ হাজার আহত যোদ্ধার অপরিসীম ত্যাগের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছি, যে বাংলাদেশ হবে ন্যায়ভিত্তিক, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। সেই আকাঙ্কা পূরণ করতে আপনি সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন, এবং কমিশনারগণ তাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। অথচ আজকে বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানার কর্মকাণ্ড এবং আপনাদের অবস্থান হাসিনার শাসনামলকেও হার মানিয়েছে। এটা শহীদদের রক্তের সঙ্গে প্রতারণা।
অভিযোগপত্রে আতাউল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদি কালো আইনের উপর দাঁড়িয়ে থাকা এই নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আহবান, রুমিন ফারহানাসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য যথাযথ ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ, নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকারের জনগণের একটি কমিশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আপনারা যদি নিরপেক্ষ থাকতে না পারেন তাহলে প্রয়োজনে পদত্যাগ করে যোগ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেবেন।