জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মেঝো মেয়ে আমাতুল্লাহ সারমিনের লেখা স্ট্যাটাসটি হুবাহুব নিচে তুলে ধরা হলো…
শহীদ পরিবারের পোস্ট দেখে অবাক হয়েছি অনেক। তবে বিষয় টা অনেক চিন্তার ও। আমাদের নেতাদের মামলা থেকে ফাসি পর্যন্ত যারা আমরা দেশে ছিলাম, প্রতিটি ঘটনার সাথে জড়িত ছিলাম তারা দেখেছি আমাদের এডভোকেট ভাইদের পেরেশানি, কেন্দ্রের সর্বোচ্চ ফোকাস ছিল তখন মামলা গুলো। আমাদের ভাইরা কত নির্যাতিত হয়েছেন, পরিবার ছাড়া হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন। আমি দেখেছি, যারা এগুলো সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি আর যারা বিদেশে ছিল তাদের মাঝে চিন্তার পার্থক্য আছে। আবার যে সংগঠন করে আর করেনি তার মাঝে পার্থক্য আছে।
আবার আমাদের মত ফ্যামিলির অনেকে সদস্য ই শুধু তার বাবাকে বাবা হিসাবে নিয়েছেন, তারা যে একজন ইসলামী আন্দোলনের নেতা, জামায়াতে ইসলামী র নেতা এটা মনে করেন না। আবার অনেকের ই কিছু ট্রমা ইস্যু আছে, যেখান থেকে তারা বের হতে পারেন নি।
কতগুলো বিষয় চিন্তা করা দরকার :
🔷 আবার বাবা যা মনে করতেন তা কি সবসময় ঠিক ছিল??
ধরেন আমার বাবা জেলখানায় আবেগের সময় বা কোন এক কস্টের মাঝে কোন একটা কথা বলেছেন বা একটা চিঠি লিখেছেন সেটাই কথাটাই কি চরম সত্য হবে। সেটাই কি ইসলামি আন্দোলনের জন্য একমাত্র ভালো সমাধান??
এই যে মনে করা আমার বাবা যা সমাধান দিয়েছিলেন তাই ঠিক আর সবাই ভুল, আমার বাবা ই সবচেয়ে ভালো ছিলেন আর সবাই এত ভালো না, এটা ইসলামের সাথে যায় না।
🔷তারপর হলো শুধুমাত্র শোনা কথায়, কোন প্রমান ছাড়া কারো সম্পর্কে এত বড় অভিযোগ দেয়া ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ। ইসলামের সামান্য জ্ঞান থাকলে এটা দেয়া পসিবল না।
🔷আরেকটা বিষয় আজকে শেয়ার করি এখন অনেকেই এ,বি পার্টি করেন, এক্স শিবির আছে। অনেকেই সংগঠন থেকে কোন কারনে কস্ট পেয়ে এখন আর করেন না।
আমি যতবার কোন কস্টের কথা শেয়ার করেছি ততবার আমার মেসেঞ্জারে অনেক মেসেজ এসেছে, আপনার এই কস্টের পিছনে সংগঠন দায়ি কিনা, তাদের ভূমিকা কি ছিল,
তারা কোন সাহায্য করেছেন কিনা। আমি বুঝেছি যারা সংগঠন কে বা কিছু নির্দিষ্ট মানুষকে নিয়ে তাদের মনের ঝাল মেটাতে চায় তারা এ-ই সুযোগ চায়। এটাও একটা ফাদ। এই ফাদে পা দেই নি কোন দিন ও। মাঝখানে দেখতাম সব জায়গায় শুধু কমেন্ট, শহীদদের জন্য সংগঠন কি করেছে, আযহার সাহেব বের হয় না কেন, ইচ্ছা করে করছে সংগঠন। সারাদিন সংগঠন এর বদনাম।
যাদের বাসা থেকে আমি চিরদিনের জন্য চলে এসেছি তারাই বরং AB পার্টির ছিল। আমাদের পরিবারকে,আমাকে অনেক অসম্মান করেছে।
🔷 সংগঠন আমাদের সব সমস্যা শুধু দেখেই নি সমাধান করার ও চেষ্টা করেছে সব সময়।আমরা সারাক্ষণ সংগঠনের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত ছিলাম বলেই আমাদের ট্রমা হয় নি। আমার ভাইয়ের বিদেশ যাওয়া, আমার ডিভোর্স সংক্রান্ত জটিলতা সহ আরও অনেক সমস্যার সময় আমরা শুধু সংগঠন কে পাশে পেয়েছি।
🔷আমার সমস্যার সময় যখন আমাকে নিয়ে অনেক অপবাদ ছড়ানো হচ্ছিল তখন ড: শফিকুল ইসলাম মাসুদ ভাই একদিন আমাদের বাসায় আসলেন। তিনি যখন আমাদের বাসায় আসছেন তখন অনেক জটিল অবস্থা। পুলিশ উনাকে হন্যে হয়ে খুজছেন। তারপর ও অনেক রিস্ক নিয়ে আমাদের বাসায় এসে সব আম্মুর কাছ থেকে শুনে গেলেন। তারপর আর কেউ কথা বলে নি।
🔷কয়েকদিন আগে একটা সমস্যার জন্য উত্তরের রেজাউল করিম ভাইকে কল করলাম, উনি পরের দিন ই লোক পাঠিয়ে সমাধান করে দিলেন।
তাই বলবো একজন, দুইজন এর পোস্ট দেখে শহীদ পরিবারগুলোকে জাজ করেন না। আমাদের আগের এবং এখনকার সব নেতাদের সম্মান ই আমাদের সম্মান।
আল্লাহ আমাদের ভুল গুলো কে মাফ করুন। আমিন।