ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ৪৮ ঘণ্টা পরও কেউ আটক হয়নি। তবে দুই সন্দেহভাজনের বাড়ি বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী।
ভারত সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দুই জনের বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। ধ্বংস করার আগে তল্লাশি চালিয়ে সন্দেহভাজন ওই দুই ব্যক্তির বাড়ি থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ওই দুই সন্দেহভাজনের নাম আদিল হুসাইন ও আসিফ শেখ। এর আগে জম্মু–কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে অনন্তনাগ জেলার বাসিন্দা জনৈক থোকার হামলার মূল হোতা বলে দাবি করছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এই হামলার ষড়যন্ত্রকারীদের একজন হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে শেখ নামে পুলওয়ামারের এক বাসিন্দার নাম। গতকাল অনন্তনাগ পুলিশ, থোকার এবং আরও দুই সন্দেহভাজনের স্কেচ প্রকাশ করে। পুলিশ জানায়, ওই দুই ব্যক্তি পাকিস্তানি নাগরিক এবং তাদের ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক নোটিশে পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুই পাকিস্তানি সন্দেহভাজনের নাম হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান এবং আলি ভাই ওরফে তালহা ভাই। তাঁরা পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর–ই–তইয়্যেবার সদস্য বলে ধারণা করছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী।
গত মঙ্গলবার পেহেলগামের বৈসরণ এলাকায় পর্যটকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী, এতে নিহত হয়েছেন ২৫ ভারতীয় এবং এক নেপালি নাগরিক। এ হামলায় জড়িতদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এর আগে, গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী মোদী মন্ত্রিসভার সুরক্ষা বিষয়ক কমিটির এক জরুরি বৈঠক আহ্বান করেন। ওই বৈঠকের পর, ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়—এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি সামরিক অ্যাটাশেদের বহিষ্কার, ৬০ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত এবং আতারি স্থলবন্দর তৎক্ষণাৎ বন্ধ করা। বিপরীতে পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে এক গাদা পদক্ষেপ নিয়েছে। সিমলা চুক্তি স্থগিত ও আকাশসীমা বন্ধের পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক ছিন্ন করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান।