চিরবৈরী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের শঙ্কা পাঁচ ভাগের এক ভাগ বা ২০ শতাংশ। সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা খুব বেশি না হলেও ‘ভুল বিচার বা অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়ার’ ফলে পারমাণবিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংরক্ষণাগার (ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভ) এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের গোয়েন্দা প্রতিবেদন ফাঁসের পর ওঠে এসেছে এসব ভয়াবহ তথ্য।
১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো সামরিক উত্তেজনা পারমাণবিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে—এই শঙ্কা নিয়ে গোটা অঞ্চলটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তারা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতরভাবে বিবেচনা করেছিল এবং এমনকি একটি পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা ২০ শতাংশ বলে অনুমান করেছিল।
১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়, সর্বাত্মক যুদ্ধের শঙ্কা খুব বেশি না হলেও, ‘ভুল বিচার বা অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়ার’ ফলে পারমাণবিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অত্যন্ত তীব্র।’
১৯৯৩ সালের মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইই) অনুমান করে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের সম্ভাবনা ছিল পাঁচ ভাগের একভাগ বা ২০ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধ হয়তো অনিবার্য নয়, কিন্তু ‘কাশ্মীর’, ‘সন্ত্রাসবাদ’, ‘জাতিগত সহিংসতা’ এবং ‘অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপের’ মতো সংঘাতপূর্ণ ইস্যু এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে যুদ্ধের শঙ্কাকে জিইয়ে রাখে।’
প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, ভারত যদি পাকিস্তানের করাচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা করে, তাহলে তেজস্ক্রিয় আয়োডিন-১৩১ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটাতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ২৫ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত মানুষ ১০-২০ আরইএম মাত্রার তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হতে পারে যাতে বহু সংখ্যক বাসিন্দা থাইরয়েড এবং ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে।
এই বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ভারতীয় কৌশলবিদরা ধারণা করেছিলেন, পাকিস্তানও ভারতের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে পাল্টা আঘাত হানতে পারে। ফলে দুই দেশই মারাত্মক ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে।