পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিজেদের মুসলিম বিশ্বের রক্ষক ও বিশ্বাসের অতন্দ্র প্রহরী বলে দাবি করলেও, গাজা যখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়, তখনও তাদের ভূমিকা নীরব ও নির্লিপ্ত। কিন্তু কেন? লেখক যুক্তি দেন, এর পেছনে আছে পাকিস্তানি সামরিক ও রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণির এক ধরনের ‘জায়নবাদী মানসিকতা’, যা মার্কিন সাম্রাজ্যের আনুগত্যে সৃষ্ট এবং ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহ বিপর্যয়ের প্রতি নীরব উদাসীনতা।
পাকিস্তানের জেনারেলরা যুক্তরাষ্ট্রে সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে কেবল যুদ্ধশিক্ষা নয়, বরং ওয়াশিংটনের প্রতি আনুগত্য, তেলআবিবের প্রতি নম্রতা এবং পশ্চিমা আধিপত্যকে মেনে নেওয়ার মানসিকতা নিয়ে ফেরেন। জেনারেল আসিম মুনীর- যিনি কুরআনের হাফেজ হিসেবে পরিচিত- গাজার গণহত্যা নিয়ে নীরব থেকেছেন, অথচ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেলের জন্য সুপারিশ করেছেন, যিনি ফিলিস্তিনে নিপীড়নের অন্যতম রূপকার।
সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরে সোমবার (১৪ জুলাই) প্রকাশিত জুনায়েদ এস আহমেদের লেখা নিবন্ধে বলা হয়, পাকিস্তানের সামরিক অভিজাতরা ইসরায়েলের মতো দমন-পীড়নের রাষ্ট্রকাঠামোর সমালোচনা করেন; তারাই দেশে গুম, সেনা-সমর্থিত ভোট ব্যবস্থা এবং বাকস্বাধীনতা দমন করে থাকে।
যখন ভারত সীমান্তে হামলা করে, তখন দেশজুড়ে দেশপ্রেমিক গান, বিমান উড্ডয়ন আর সামরিক মহড়ায় মাতেন তারা। কিন্তু ইসরায়েল যখন গাজায় হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেয়, তখন তারা কেবল বিবৃতি দেন: ‘পাকিস্তান গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’
লেখকের আহ্বান পাকিস্তানি জনগণকে জেনারেলদের বাহাদুরি ও সম্মানের ভ্রান্ত মিথ থেকে সরে আসতে হবে। কারণ গাজার মতো মানবিক বিপর্যয়ে যারা নীরব থাকে, তাদের পদবি শুধু ভীরুদের অলংকার মাত্র।
যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ওয়াশিংটনের ভয়কে গাজার ভালোবাসার চেয়ে বড় মনে করে, তবে তা আসলে সার্বভৌমত্ব নয়, বরং আত্মার ভাড়া দেয়া। গাজার ধ্বংসের মাঝে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নীরবতা-তাদের আসল পরিচয় প্রকাশ করে।