Wednesday, July 23, 2025

কেন সোহাগের লাশের ওপর পৈশাচিক এমন হামলা, জানালেন মূলহোতা মহিন

আরও পড়ুন

রাজধানীর পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন আদালতে ১৬৪ ধারায় নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে মহিন আদালতকে জানান, ঘটনার দিন মহিনসহ অন্য আসামিরা ব্যবসা ছাড়ার জন্য সোহাগকে শুধু হুমকি দিতে যান। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণ করা ব্যবসা ছাড়তে নারাজ হন সোহাগ। মহিনদের হুমকিতে ঘটনার দিন সোহাগও ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তার এই ক্ষিপ্ত হওয়ার পরিস্থিতিতেই সোহাগকে হত্যা করেন মহিনসহ অন্য আসামিরা।

গতকাল রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমানের আদালত আসামি মহিনের এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দিতে মহিন আরও বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের আমল থেকে সোহাগ এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। টিটু, মহিন বিগত সরকারের আমল থেকেই বঞ্চিত ছিল। বিভিন্ন সময় সোহাগ তাদের (মহিন-টিটুসহ অন্য আসামিদের) আওয়ামী লীগের লোকজন দ্বারা মারধরও করেছে। ৫ আগস্ট-পরবর্তী সরকার পরিবর্তনের পর মহিন, টিটু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চান। ব্যবসা ছাড়ার জন্য সোহাগকে বিভিন্ন সময় চাপ দিতে থাকেন। ঘটনার দিনও ব্যবসা ছাড়ার জন্য হুমকি দিতে যান সোহাগকে। পরে সোহাগও ক্ষিপ্ত হয়। এর পরই এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় তারা। হত্যার পরিকল্পনা না থাকলেও সোহাগের ব্যবহার আসামিদের হত্যায় প্রলুব্ধ করেছে বলে জানান মহিন।

আরও পড়ুনঃ  সেই ময়নার প্রকৃত হত্যাকারীকে জানা গেল, বেরিয়ে এলো নতুন গোপন তথ্য

এ ছাড়া বিগত সময়ের মারধরের শিকার হওয়ার জন্য সোহাগের লাশের ওপর পৈশাচিক এমন হামলা চালান বলেও স্বীকার করেন এ আসামি। এদিকে বিচারক এ হত্যার মূলহোতা আসামি মহিনের জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, গতকাল দ্বিতীয় দফার রিমান্ড শেষে মহিনকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আসামি মহিন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করতে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এর আগে গত ১০ জুলাই প্রথম দফায় পাঁচ দিন ও ১৫ জুলাই দ্বিতীয় দফায় মহিনের আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুনঃ  ৮ ঘণ্টা ধরে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, যা জানা গেল

এ মামলায় গ্রেপ্তার ৯ আসামি হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন, টিটু গাজী, মো. আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, তারেক রহমান রবিন, সজীব ব্যাপারী, মো. রাজিব ব্যাপারী, নান্নু কাজী ও রিজওয়ান উদ্দীন ওরফে অভিজিৎ বসু। তাদের মধ্যে গত ১৭ জুলাই লম্বা মনির, আলমগীর ও টিটন এবং ১৯ জুলাই আসামি সজীব আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এ ছাড়া রিমান্ড শেষে রাজিব কারাগারে আটক রয়েছেন।

মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, গত ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গেটের কাছে ৩৯ বছর বয়সী ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে কুপিয়ে, পিটিয়ে ও পাথর দিয়ে থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। নিহত সোহাগ কেরানীগঞ্জের পূর্ব নামাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুরান ঢাকার রানী ঘোষ লেনে ভাঙাড়ির ব্যবসা করছিলেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। আর পুলিশ অস্ত্র মামলা করে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ