মাত্র ২১ সপ্তাহ অর্থাৎ প্রায় ৫ মাস গর্ভে থাকার পর জন্ম নেয় এক শিশু। জন্মের সময় তার ওজন ছিল মাত্র ১০ আউন্স বা ২৮৩ গ্রাম, যা একটি আপেলের ওজনের সমান।
চিকিৎসকদের মতে, এত অল্প সময় গর্ভে থাকার পর টিকে যাওয়া এক বিরল ঘটনা।
২০২৪ সালের ৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যে জন্ম নেয় নাশ কিন। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় ১৯ সপ্তাহ বা ১৩৩ দিন আগেই পৃথিবীতে আসে সে। জন্মের পরপরই তাকে নেওয়া হয় আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেট ফ্যামিলি চিলড্রেনস হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রে। সেখানে টানা ছয় মাস চিকিৎসার পর ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বাবা-মার সঙ্গে বাড়ি ফেরে সে।
চলতি জুলাই মাসে কিন তার প্রথম জন্মবার্ষিকী পালন করেছে। আর সেই বিশেষ দিনেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিয়েছে। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে আগের রেকর্ড ভেঙে কিন এখন সবচেয়ে কম বয়সে জন্ম নেওয়া জীবিত শিশুর বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী। এর আগে ২০২০ সালে আলাবামায় জন্ম নেওয়া এক শিশু এই রেকর্ডের মালিক ছিল।
চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত ২২ সপ্তাহের আগে জন্ম নেওয়া শিশুদের টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই এত আগেই জন্ম নেওয়া কিনের বেঁচে যাওয়া অভাবনীয়। তারা বলছেন, সাধারণত অপরিণত শিশুদের যেসব সমস্যা দেখা যায়, কিন তা তুলনামূলকভাবে ভালোভাবেই পার করছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মালিন্ডা শ্যাফার বলেন, কিনের জন্ম মা ও নবজাতকের চিকিৎসাব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
তবে এখনো কিনের চিকিৎসা পুরোপুরি শেষ হয়নি। শ্বাস নিতে তার অক্সিজেনের সাহায্য লাগে, খাবার খেতে হয় ফিডিং টিউবের মাধ্যমে। ধীরে ধীরে মুখে নরম খাবার দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। হৃদযন্ত্রে হালকা সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকদের ধারণা, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ঠিক হয়ে যাবে।
এর মধ্যেই কিন নিজে গড়াগড়ি দিতে পারে, এমনকি দাঁড়ানোর চেষ্টাও করছে। তার মা মলি কিন বলেন, সে এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখার চেষ্টা করছে, এটা আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দ।
তথ্যসূত্র: ইনডিপেনডেন্ট