আকাশপ্রেমীদের জন্য সোমবার (২৮ জুলাই) রাতটি হতে যাচ্ছে এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। গ্রীষ্মের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন রাত হিসেবে বিবেচিত এই দিনটিতে সন্ধ্যার আকাশে ঘটবে এক অপূর্ব মহাজাগতিক দৃশ্য। চাঁদ ও মঙ্গল গ্রহের সংযোগ, আর সেই সঙ্গে রাতভর একাধিক উল্কাবৃষ্টি। খবর লাইভ সায়েন্স
সোমবার সূর্যাস্তের প্রায় ৪৫ মিনিট পর পশ্চিম আকাশে দেখা যাবে একটি বাঁকা চাঁদ, যার মাত্র ১৯ শতাংশ অংশ আলোকিত থাকবে। চাঁদের ঠিক পাশে থাকবে মঙ্গল গ্রহ, যা এক লালচে উজ্জ্বল বিন্দুর মতো দেখা যাবে। দুটি মহাজাগতিক বস্তুর মধ্যকার দূরত্ব হবে মাত্র ১ ডিগ্রি-যা খালি চোখেই স্পষ্ট দেখা সম্ভব।
চাঁদ এ সময় প্রদর্শন করবে ‘আর্থশাইন’ নামের একটি বিশেষ আলোকপ্রক্রিয়া, যার ফলে চাঁদের অন্ধকার পাশটি পৃথিবী থেকে প্রতিফলিত সূর্যালোকে এক রহস্যময় আলোয় উদ্ভাসিত হবে। এটি আকাশে তৈরি করবে এক মায়াময় দৃশ্যপট।
এই সময়েই চোখে পড়বে পিসিস অস্ট্রিনিড উল্কাবৃষ্টি, যার সর্বোচ্চ তীব্রতা দেখা যাবে ভোররাতে। প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৫টি উল্কা দেখা যেতে পারে, যদিও এটি অপেক্ষাকৃত ছোট একটি উল্কাবৃষ্টি হিসেবে পরিচিত।
তবে আকর্ষণ এখানেই শেষ নয়। ২৯ ও ৩০ জুলাই রাতেও দেখা যাবে আরও দুটি উল্কাবৃষ্টি-ডেলটা অ্যাকোয়ারিড ও আলফা ক্যাপরিকর্নিড। পরিষ্কার আকাশে ডেলটা অ্যাকোয়ারিডে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২০টি উল্কা দেখা যেতে পারে, আর আলফা ক্যাপরিকর্নিড যোগ করবে আরও ৫টি উল্কা।
রাতভর চাঁদের আলো থাকছে না-কারণ চাঁদ ও মঙ্গল সূর্যাস্তের পর আকাশে মাত্র দুই ঘণ্টা থাকবে। এরপর তারা দিগন্তের নিচে অদৃশ্য হয়ে যাবে। ফলে রাতের বাকি সময় জুড়ে উল্কাবৃষ্টি দেখার কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।
আরও একটি বিশেষ খবর হচ্ছে, বছরজুড়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল ও প্রত্যাশিত পার্সিয়েডস উল্কাবৃষ্টির সময়ও শুরু হচ্ছে এই সময়েই। যদিও এর চূড়ান্ত পিক হবে ১২-১৩ আগস্ট রাতে, তখন আকাশে থাকবে প্রায় পূর্ণ চাঁদের আলো। তাই উল্কা দেখার আদর্শ সময় হিসেবেই ধরা হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ জুলাইয়ের রাতগুলোকে।
নিসন্দেহে, ২৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই মহাজাগতিক আয়োজন হবে একটি দুর্লভ অভিজ্ঞতা। যারা রাতের আকাশ ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি যেন এক স্বপ্নপূরণ। তাই চোখ রাখুন পশ্চিম আকাশে, সন্ধ্যার পর এবং হারিয়ে যান এক অলৌকিক রাত্রির জাদুময়তায়।