Thursday, August 14, 2025

‘ইউএনওর পায়ে ধরেও ছেলেকে রক্ষা করতে পারিনি’

আরও পড়ুন

নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমা একজন কিশোরকে বেধরক মারধর করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ইউএনও লাঠি হাতে ওই কিশোরকে মারধর করছেন এবং মারধরের একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সেখানে থাকা অন্য সরকারি কর্মকর্তারা তাকে থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

ভাইরাল ভিডিওর খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত মার্চ মাসে আটপাড়া উপজেলার বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদের এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ওই সময় ভিজিএফ চাল বিতরণের সময় উপজেলার বিষঞপুর গ্রামের হতদরিদ্র শহিদ মিয়ার ছেলে দুর্জয় চাল নিতে গিয়ে ইউএনওর শরীরের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় তাকে জনসম্মুখে চর থাপ্পর দেয়া হয়। পরে ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে আনছার সদস্যের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে নিজেই ইউএনও তাকে বেধরক মারতে থাকেন।

আরও পড়ুনঃ  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়ের প্রত্যাহার

দুর্জয়কে মারধরের পর প্রায় চার ঘণ্টা একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরিবারের অনুরোধে তাকে পরে ছেড়ে দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী দুর্জয় জানান, ‘ইউএনও আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন এবং জোরপূর্বক মুছলেখা আদায় করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি বাড়াবাড়ি করি তাহলে মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হবে। আমরা গরীব মানুষ হওয়ায় এ নিয়ে কিছু বলার সাহস পাইনি।’

ভুক্তভোগী দুর্জয়ের মা বলেন, ‘আমার ছেলেকে মারতে দেখে আমরা ইউএনওর পায়ে ধরে রক্ষা করতে চেয়েও পারিনি। চার ঘণ্টা পর সবাই মিলে তাকে হাত-পা ধরে মুক্ত করেছি।’

আরও পড়ুনঃ  বিচারপতির বিচার রায় পাল্টানো খায়রুলের রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ সহ-অপরাধী আরো তিন সাবেক প্রধান বিচারপতি হতে পারে মৃত্যুদণ্ড

দুর্জয়ের চাচী বলেন, তিনিও সেদিন চাল আনতে গিয়েছিলেন। তবে ছেলে ও মেয়েদের আলাদা লাইনে চাল দিচ্ছিল। দুর্জয়কে ইউএনও মারধর করার পর তিনি গিয়ে ইউএনওর কাছে হাতজোর করে ক্ষমাও চান। তারপরও তাকে মেরেছে।

ঘটনার পর ৭ আগস্ট দুর্জয় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে এ বিষয়ে আটপাড়া ইউএনও রুয়েল সাংমা এবং জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। একাধিকবার ফোন করেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঃ  সেনা অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

নেত্রকোণা জেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদ হাসান বলেন, ‘ইউএনওর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এমন অপকর্মের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। তাই দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও শক্তিশালী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি আমাদের।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ