Saturday, August 16, 2025

এইমাত্র পাওয়া: কখন সরকার থেকে সরে ‍যাবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানালেন

আরও পড়ুন

আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের টকশোতে তিনি এ কথা জানান।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে আমি রাজনীতিতে আছি। আমার মতে, নির্বাচনের সময় রাজনীতিতে যারা আছে, তারা সরকারে থাকা উচিত না। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাবো।’

তবে তিনি এখনও স্পষ্ট করেননি, রাজনীতিতে যুক্ত থাকার পর আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা বা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেবেন কি-না।

টকশোতে একক অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে থাকা আসিফ মাহমুদ। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও এক বছরের কার্যক্রম, সামরিক বাহিনীর ভূমিকা, জুলাই আন্দোলনের মিত্র দলের বিভাজন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, নিজের রাজনৈতিক গন্তব্য এবং মুরাদনগরের সাম্প্রতিক ঘটনাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।

আরও পড়ুনঃ  কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আবার কোটা চালু কি বাটপারি নয়, প্রশ্ন ঢাবি অধ্যাপকের

তিনি দাবি করেন, ‘আমি পতাকাবাহী গাড়ি বা ক্ষমতার মোহে নয়, বরং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে সোচ্চার থাকার জন্যই সরকারে আছি।’

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যার মধ্যে বড় মাইলফলক হলো জুলাই ঘোষণাপত্র। এছাড়া জুলাই সনদ, স্থানীয় সরকার সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা বাকি আছে। এই দায়িত্ব শেষ না করলে ঐতিহাসিক দায় থেকে যাবে।’

গত কয়েক মাস আগে এমন একটি ভিডিও বক্তব্য দিয়েছিলেন যেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রথমে মেনে নিতে চাননি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এটি সরকার গঠনের আগের ঘটনা। একটি বৈঠকে সেনাপ্রধান ইউনূসের বিরুদ্ধে মত দেন, কারণ আওয়ামী লীগ তার সমর্থক নয়। পরে মানলেও ‘বুকে পাথর চাপা’ শব্দটি ব্যবহার করেন।’

আরও পড়ুনঃ  মাইলস্টোনের ট্রাজেডিকে পুঁজি করে দেশকে ধ্বংস করা আওয়ামী চক্রান্ত ফাঁস!

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমার বা সরকারের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। ৫ আগস্টের পর বা গণঅভ্যুত্থানের আগে সেনাবাহিনীর অবদান আমরা স্বীকার করি। তবে সেনাপ্রধানের সঙ্গে দ্বিমত শুধু আওয়ামী লীগ বিষয়ক।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নানা রাজনৈতিক শক্তি সক্রিয় থাকার ইঙ্গিত দিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘একটি মহল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে এবং দলটিকে প্রধান বিরোধীদল হিসেবে দাঁড় করাতে চায়। এমনকি কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকে জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচনে নেয়ার পরিকল্পনা চলছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস সরকারের ভেতরও সরকার আছে। একক সরকার নেই, বরং একাধিক সরকার চলছে। ৫ আগস্টের পর সামরিক বাহিনী ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তিও আছে। উপদেষ্টারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন।’

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকার কারণে নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর দায় আমার ওপর পড়ছে, কিন্তু স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের হাতে নেই। সব দল রাজি হলেও বিএনপি ও সহযোগী কিছু দল রাজি হচ্ছে না।’

আরও পড়ুনঃ  ‘যা জানা গেল’ ধাঁচের সাংবাদিকতা নিয়ে প্রেস সচিবের ব্যঙ্গ

কুমিল্লার মুরাদনগরে মব লাঞ্চন, শিক্ষক নিপীড়ন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে যারা জড়িত তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা আলোচনা চলছে। এসবকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অপপ্রচার আখ্যায়িত করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’

তিনি আরও জানান, ‘কেউ মনে করছেন আমি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেব। এটা সত্য নয়।’

আসিফ মাহমুদ যোগ করেন, ‘আমি জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। স্থানীয় স্তরে গিয়ে নির্বাচন ও রাজনীতি করা আমার জন্য সুবিধাজনক নয়। ঢাকা শহরই আমার রাজনৈতিক গন্তব্য।’

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ