ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে গত ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই দিন প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ইউক্রেন শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন দুই নেতা।
যদিও বৈঠকে শেষ পর্যন্ত কোনো শান্তিচুক্তি হয়নি কিন্তু আলাস্কার ওই বৈঠক ঘিরে পুতিনকে নিয়ে বেরিয়েছে আরেকটি চাঞ্চল্যকর খবর। জানা গেছে, ওই দিন আলাস্কা থেকে পুতিনের ‘মল’ বিশেষ স্যুটকেসে করে রাশিয়ায় ফেরত নিয়ে গেছেন তার দেহরক্ষীরা। এনডিটিভির প্রতিবেদনে এমনটিই দাবি করা হয়েছে।
কেন নেওয়া হয় এই ব্যবস্থা?
বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পুতিনের বিদেশ সফরের সময় তার দেহরক্ষীরা নিয়মিতভাবে তার মল সংগ্রহ করেন এবং তা রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যান। এই ব্যবস্থা নেওয়া হয় মূলত পুতিনের স্বাস্থ্যগত তথ্য গোপন রাখতে। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যেন তার শারীরিক অবস্থা বিশ্লেষণ করতে না পারে, সেই নিরাপত্তা থেকেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
রাশিয়ার ফেডারেল প্রোটেকশন সার্ভিস (FSO) এর সদস্যরা এই দায়িত্ব পালন করেন। বিদেশ সফরে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থেকে তারা পোর্টেবল টয়লেট ব্যবহার করান এবং প্রয়োজনীয় বর্জ্য নির্দিষ্ট ব্যাগে করে একটি বিশেষ ব্রিফকেসে বহন করে দেশে ফেরত নেন।
এই ঘটনা নতুন নয়। ২০১৭ সালে ফ্রান্স সফরের সময় এবং পরে ভিয়েনা সফরেও পুতিনের মল সংগ্রহ করে রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। ২০২২ সালে ফরাসি ম্যাগাজিন Paris Match এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে। পরে সাবেক BBC সাংবাদিক ফরিদা রুস্তমোভা ও সাবেক DIA কর্মকর্তা রেবেকা কফলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শুধু পুতিনই নন, শীতল যুদ্ধের সময়ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এমন পন্থা অবলম্বন করেছে। সাবেক সোভিয়েত এজেন্ট ইগর আতামেনকো জানান, জোসেফ স্ট্যালিন চীন নেতা মাও সেতুংয়ের মল পরীক্ষা করে তার মনস্তাত্ত্বিক প্রোফাইল তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি মস্কো সফরে মাওয়ের জন্য বিশেষ টয়লেট বানানো হয়েছিল যা ড্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল না। তার বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হতো।
৭২ বছর বয়সী পুতিনের স্বাস্থ্য নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা গুঞ্জন রয়েছে। গত নভেম্বরে কাজাখস্তানে এক সংবাদ সম্মেলনে তার পা কাঁপতে দেখা যায়, যা পার্কিনসনস রোগ বা অন্য কোনও স্নায়ুজনিত অসুস্থতার ইঙ্গিত হতে পারে বলে চিকিৎসকেরা মত দিয়েছিলেন।
পুতিনের এই ‘গোপন বর্জ্য অপারেশন’ আধুনিক কূটনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন এক নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।