Tuesday, August 26, 2025

শত শত নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা, আটক ব্যক্তির ভয়ঙ্কর তথ্য

আরও পড়ুন

দক্ষিণ ভারতের একটি ছোট মন্দির শহরকে ঘিরে সম্প্রতি ভয়াবহ তথ্য দিয়েছেন এক ব্যক্তি। পুলিশের হাতে আটক ওই ব্যক্তির দাবি, শত শত নারীকে ধর্ষণ ও হত্যার পর তাকে মৃতদেহগুলোকে গোপনে সমাধিস্থ করতে বাধ্য করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের ধর্মস্থলে। এ নিয়ে নানা রহস্য জট পেকেছে। খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, কর্ণাটকের ধর্মস্থলে অবস্থিত শ্রী মঞ্জুনাথ স্বামী মন্দির। শতাব্দী প্রাচীন এই মন্দিরটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। পবিত্র এই স্থানটির সঙ্গে বহু মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি এবং জীবনের গভীর সম্পর্ক জড়িত। সেই ধর্মস্থলের সাবেক এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী গত জুলাই মাসে পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মন্দিরে কাজ করার সময় তাকে শত শত নারী ও তরুণীর মৃতদেহ গোপনে পুঁতে ফেলার জন্য বাধ্য করা হয়। তিনি জানান, সেসব নারীররা নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  এইমাত্র পাওয়া: অসুস্থ তরুণীকে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে গণধর্ষণ

আটক ব্যক্তির পরিচয় গোপন রেখেছে পুলিশ। জনসমক্ষে অনা-নেয়ার সময় সর্বদাই কালো পোশাক ও মাস্কে ঢেকে রাখা হয় তাকে। অভিযোগের স্বপক্ষে একটি মানুষের মাথার খুলি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে ওই ব্যক্তি দাবি করেন এটি তিনি সদ্য কবর থেকে তুলে এনেছেন। এই অভিযোগের পর রাজ্যের রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকার ঘটনাটি তদন্তে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছেন।

শনিবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একজন এসআইটি কর্মকর্তা জানান, ওই ব্যক্তিকে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের শুরুতে তিনি ১৩টি স্থান চিহ্নিত করেন। যেখানে তিনি মৃতদেহ কবর দিয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন। এসব স্থান ছিল দুর্গম এবং ঘন ঝোপঝাড়ে আবৃত।

আরও পড়ুনঃ  বিমানে ঘুমন্ত কিশোরীকে পাশে পেয়ে সংযম হারালেন ভারতীয় ব্যবসায়ী, অতঃপর...

এসআইটি এই স্থানগুলোতে কয়েক সপ্তাহ ধরে খননকার্য চালায়। যদিও কিছু মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। তবে ফরেনসিক পরীক্ষার আগ পর্যন্ত সেগুলোর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এসআইটি কর্মকর্তার মতে, ওই ব্যক্তি যে মাথার খুলিটি প্রমাণ হিসেবে দিয়েছেন, তা তার দেখানো কোনো স্থান থেকে আনা হয়নি।

এই অভিযোগ মন্দির প্রশাসন এবং এর বংশানুক্রমিক প্রধান হেগড়ে পরিবারের ওপরও সন্দেহ তৈরি করেছে। যদিও মন্দিরের প্রধান প্রশাসক বীরেন্দ্র হেগড়ে এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, মন্দির কর্তৃপক্ষ তদন্তে পূর্ণ সহায়তা করছে এবং বিচার ব্যবস্থার ওপর তাদের পূর্ণ আস্থা আছে।

আরও পড়ুনঃ  বিদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে কূটনীতিবিদদের নিষেধ করলো যুক্তরাষ্ট্র

এ ঘটনা নিয়ে রাজ্য বিধানসভাতেও তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। এটিকে একটি হিন্দুদের ধর্মীয় স্থানের বিরুদ্ধে ‘কলঙ্ক লেপনের অভিযান’ বলে আখ্যা দিয়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। অন্যদিকে, রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর জানান, সরকারের উদ্দেশ্য কাউকে রক্ষা করা বা হেয় করা নয়, বরং সত্য উদঘাটন করা। তিনি বলেন, যদি কিছুই না পাওয়া যায় তবে ধর্মস্থলের মর্যাদা আরও বাড়বে। আর যদি কিছু বেরিয়ে আসে তাহলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। এই ঘটনাটি এখন এক নতুন মোড় নিয়েছে। অভিযোগকারীর গ্রেপ্তারের পর তদন্তের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ