ইডেন মহিলা কলেজের প্রস্তাবিত হজরত রাবেয়া বসরী (রহ.) ছাত্রীনিবাস থেকে মাদকসেবন ও অশালীন আচরণের অভিযোগে এক ছাত্রীকে অস্থায়ীভাবে হলত্যাগে বাধ্য করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত ছাত্রী ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং তিনি হলের ৮১০ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সিনহা নিশাত নামের ওই ছাত্রী দীর্ঘদিন ধরে হলে অশালীন আচরণ করে আসছিলেন। এ বিষয়ে একাধিকবার হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায় গত ১৫ জুলাই রাতে, যখন শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তাকে অভিভাবকের সঙ্গে বাসায় পাঠানো হয়।
তবে পরদিন ১৬ জুলাই রাতেই তিনি আবার হলে ফিরে আসেন। সে রাতেই ঘটে আরও একটি অস্বস্তিকর ঘটনা। শিক্ষার্থীরা জানান, তিনি ওয়াশরুম থেকে জামাকাপড় ছাড়া রুমে প্রবেশ করেন, যা দেখে রুমমেটরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং পাশের কক্ষের শিক্ষার্থীদের ডেকে আনেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাকে জামাকাপড় পরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার আসমা সুলতানা বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, মেয়েটির আচরণ অশালীন এবং তাকে দেখে মাদকাসক্ত মনে হয়। তারা আরও জানিয়েছে, সে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এজন্য তারা তাকে হলে রাখতে চায় না। ১৫ তারিখ অভিভাবক ডেকে বাসায় পাঠানো হলেও ১৬ তারিখে সে ফিরে আসে। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পুনরায় তাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে।
সিদরাতুল মুনতাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ওই ছাত্রী ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত এবং মাঝেমধ্যে রাতে মিছিল শেষে হলে ফিরে আসেন। আমরা বহুদিন ধরে তার নানা অশোভন আচরণের সাক্ষী। এমনকি আজও তিনি গোসল শেষে জামাকাপড় ছাড়া রুমে প্রবেশ করেন। বিষয়টি সুপারকে জানালেও প্রথমে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, বর্তমানে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সিনহা নিশাত বলেন, আমি ছাত্রদল করি বলেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাকে টার্গেট করেছে। আমি হলে থাকতে পারছি না।
মাদক সেবনের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার ওপর গজব পড়বে যদি আমি এমন কিছু করে থাকি। আমি ম্যামদের মাধ্যমে টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট দেখাব। মাত্র দুই দিন পরেই প্রমাণ করব, আমি কোনো দিন ড্রাগ নেইনি।
এ ঘটনার পরও কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।