গাজা উপত্যকায় খাদ্যসংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জীবন ঝুঁকির মধ্যেও খাবারের খোঁজে মরিয়া হয়ে পড়েছে গাজার বাসিন্দারা। এক ব্যাগ আটা পাওয়া মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া, তবুও গাজাবাসীদের কাছে এর কোনো বিকল্প নেই।
শিশুকে কোলে নিয়ে গাজার একটি সাহায্য কেন্দ্রে আসা সমুদ ওয়াহদান বলেন, ‘আমি আমার সন্তানদের জন্য জীবন ঝুঁকি নিয়ে এত দূর এসেছি। তারা এক সপ্তাহ ধরে কিছু খায়নি।’
তিনি বলেন, ‘খাবারের অভাবে আমি জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরছি। অন্তত একটা রুটি পেলেও আমার সন্তানের মুখে দিতে পারতাম।’
গাজা শহরের আরেক বাস্ত্যুচুত নারী তাহানি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি আটাআনতে এসেছি, আমার সন্তানদের খাওয়ানোর জন্য খাবার খুঁজছি। আমার একটি সন্তান ক্যানসারে আক্রান্ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা আল্লাহর অনুসারীরা জেগে উঠবে এবং এসব লোকদের দেখবে। তারা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।’
ইসরাইলি বাহিনীর গুলির ঘটনাতো আছেই, এরমধ্যে গাজাবাসীর অভিযোগ, ত্রাণ হাতে পেলেও স্থানীয় গ্যাং এসে ত্রাণ কেড়ে নেয়। জাতিসংঘের নিজ উদ্যোগে ত্রাণ পৌঁছানোর অনুরোধ করেছেন তারা।
এর মধ্যেই হামলা হয়েছে গাজা সিটির একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে। বেশ কয়েকজন হতাহত হন। অপরদিকে, আল-মাওয়াসি অঞ্চলের একটি তাবু শিবিরে ড্রোন হামলায় শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।
গাজার পরিস্থিতিকে অত্যন্ত জটিল ও নজিরবিহীন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। তাই তারা ভূমি নয়, আকাশপথে সাহায্য পাঠাচ্ছে গাজায়। এরমধ্যেই দুধ ও খাদ্য সহায়তা বিমান দিয়ে ফেলা শুরু হয়েছে। যদিও এটিকে ব্যয়বহুল ও অকার্যকর উপায় বলে শংকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
গাজার দুর্ভিক্ষের চিত্র যখন আরও ভয়াবহ, তখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন মার্কিন কংগ্রেসের প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাটরা। প্রগতিশীল সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ইসরাইল এখন গাজায় নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান গাজায় সহায়তা সরবরাহে ব্যর্থতার নিন্দা করেছেন।
তিনি বলছেন, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু মিলে মানবিক সাহায্য বন্ধ করে মৃত্যুর মিছিল বাড়াচ্ছেন। কংগ্রেসম্যান গারামেন্দি অভিযোগ করেছেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় খাবার পৌঁছাতে দিচ্ছে না, যা গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে।
সূত্র: আল জাজিরা, স্কাই নিউজ