মক্কার পবিত্র গ্র্যান্ড মসজিদ কাবা শরিফের পাশে ফিলিস্তিনের পতাকা তুলে গাজার ওপর অবরোধ ও দুর্ভিক্ষ বন্ধের আহ্বান জানানোয় সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মিশরীয় এক হাজি। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
রোববার (২৭ জুলাই) মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওই হাজি কেঁদে কেঁদে বলছেন, ‘ও ইসলামা!’ এই শব্দটি ঐতিহাসিকভাবে মুসলমানরা বিপদে পড়লে তাদের বেদনা প্রকাশ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। তিনি চিৎকার করে বলছিলেন, ‘গাজার শিশুরা মরছে, হে মুসলমানরা!”
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, এর কিছুক্ষণ পরই সৌদি নিরাপত্তা সদস্যরা এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামের পবিত্রতম স্থানগুলোতে সৌদি সরকারের রাজনৈতিক মতপ্রকাশের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি, হজ ও ওমরাহ পালনের সময় সব ধরনের রাজনৈতিক স্লোগান, প্রতীক বা জাতীয় পতাকা নিষিদ্ধ রাখা হয়, যাতে ইবাদতের পবিত্রতা বজায় থাকে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এই নীতির আড়ালে মূলত ফিলিস্তিনের পক্ষে সংহতি প্রকাশ দমনের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। এর আগে ২০২৩ সালে এক ব্রিটিশ হাজিকে আটক করা হয়, কারণ তিনি ফিলিস্তিনের পতাকার রঙের তসবিহ এবং সাদা কেফিয়ে (আরবীয় স্কার্ফ) পরেছিলেন।
মক্কার বাইরেও, সৌদি সরকার সম্প্রতি দেশটির নাগরিকদের ইসরাইলবিরোধী মত প্রকাশ বা গাজার প্রতি সংহতি দেখানোর কারণে গ্রেফতার করছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, ২০১৭ সালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে সৌদিতে শান্তিপূর্ণ মতপ্রকাশ, বিশেষ করে পররাষ্ট্রনীতি বা আঞ্চলিক জোট নিয়ে সমালোচনার কারণে গ্রেফতারের ঘটনা বেড়েছে।
গাজায় ইসরাইলি হামলা চলমান থাকায় মধ্যেই মক্কার এই আটকের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে।