ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর থেকেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজ করছে সীমাহীন উত্তেজনা। দেশের এই সংকটময় মুহুর্তে অনেক বাংলাদেশীই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। এদিকে যারা ভ্রমনের উদ্দেশ্য বা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করছেন তাদের অধিকাংশই ভিসা পাচ্ছেন না বরং প্রত্যাখান করে দেওয়া হচ্ছে তাদের আবেদন। এবার এই বিষয়টি নিয়েই একটি টকশোতে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন নাগরিক টিভির এডিটর ইন চিফ নাজমুস সাকিব।
এই সাংবাদিক তার আলোচনায় তুলে ধরেছেন বংলাদেশীদের ভিসা না পাবার কারণ। তার মতে, বাংলাদেশীদের ভিসা না পওয়ার প্রধান কারণ রাজনৈতিক। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশই দ্বায়ী ভিসা রিজেক্ট হবার পিছনে। এসময় তিনি ২৪ এর গণঅভু্যত্থানের শহীদ মুগ্ধ এর ভাই স্নিগ্ধ ও তার স্ত্রীর ভিসা না পাবার কথাও তুলে ধরেন।
আগে একাধিকবার সেই দেশে গিয়েছেন কিন্তু, বর্তমানে আর সেই দেশ তাকে ভিসা দিচ্ছে না। এমন লোকের উদাহরণ টেনে নাজমুস সাকিব বলেন, ‘থাইল্যান্ড মালয়েশিয়া কিংবা ইউরোপ আমেরিকার ভিসাও কিন্তু এই মুহূর্তে সোনার হরিণ হয়ে গিয়েছে এবং চাকরি সূত্রেও পর্যটক হিসেবে একাধিকবার থাইল্যান্ড সফর করেছেন আমার এমন একজন পরিচিত ব্যক্তি তারপাসপোর্টে রয়েছে ইউরোপ এবং আমেরিকা সহ একাধিক দেশের ভিসা এবং এ বছর এপ্রিল মাসে আবেদনের পর তার ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাকার থাই দ্রতাবাস।’
তার মতে বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলেই এখন আর ভিসা পাওয়া সহজ নয়, তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে মানে অনেক দেশের মানে ভিসা যতটা সহজ মনে হয় বাস্তবে কিন্তু ততটা না। এবং মালদোভা ও বাহরাইনের ই-ভিসার ক্ষেত্রেও কিন্তু অনেকে অভিযোগ করছেন যে বাংলাদেশের পাসপোর্টে এগুলো এখন পাওয়া যাচ্ছে না। আজকালকার মালদোবা বাহরাইনের ভিসার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। সৌদি আরবের মত একটি দেশ সেখানেও কিন্তু আপনার ওমরা করতে এখন যারা যেতে চাচ্ছেন তাদেরকেও কিন্তুক্ষেত্রে অনেক জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’
ভিসা রিজেকশনের পিছনের কারণ হিসেবে বংলাদেশ থেকে বেড়ে চলা অবৈধ অভিভাষণ আর বরৃতমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দ্বায়ী করে তিনি বলেন, ‘এর পেছনে বাংলাদেশ থেকে বেড়ে চলা অবৈধ অভিভাষণের হার যেমন দায়ী যে অবৈধভাবে আপনি অভিভাষণ করছেন আপনি সেই কাগজপত্র দিচ্ছেন এটা যেমন দায়ী পাশাপাশি বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এটা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে।’
সাংবাদিক নাজমুস সাকিব এর মতে, বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্য দেশগুলো ভাববছে বাংলাদেশী এদেশে এলে যদি আর ফিরে না যায়? মূলত এই করণেই তারা ভিসা দিতে ভয় পাচ্ছে। এই সাংবাদিক উদ্ভূত অবস্থা থেকে বের হয়ে আাসতে কূটনৈতিক সমাধানের পরামর্শ দিয়েছেন। তার মতে, এজন্য অবশ্যই সরাকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাংবাদিক নাজমুস সাকিব সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে তারা জনগণকে কত বড় একটা জাহান্নামের দিকে ফেলে দিয়েছে যে আজকাল আমরা বাইরের দেশে ভিসা নিয়ে আমরা বিদেশে চিকিৎসা করতে যাব ভিসা পাচ্ছি না জনগণকে আপনি কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মানুষ যে ভিসা পাচ্ছে না কোন একটা দেশে যেতে পারছে না টুরিজম ভিসা বলেন স্টুডেন্ট ভিসায় বলেন অনির্বাচিত সরকার যদি দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় বসে থাকে এবং তারা যদি নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা না করে তখন কিন্তু এরকমই হবে। আমার কথা হচ্ছে আপনি জনগণকে এভাবে কষ্টে ফেলে রেখে জাস্ট এনসিপির কয়েকটা বাটপারকে চান্দাবাজির সুযোগ দেয়ার জন্য ক্ষমতাটাকে আকড়ে ধরে রাখবেন। এই অধিকার আপনাকে কেউ দেয় নাই। এই বলেছিলাম না যে লাখো শহীদের রক্তে কেনা দেশটা কারো বাপের না দেশটা হাসিনারও বাপের যেমন না দেশটা এদেরও কারো না।’
এসময় নাজমুস সাকিব নির্বাচনের বিষয়ে আরও বলেন, ‘আমি মনে করি যে যত দ্রুত তারা একটা নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করবে তত আমাদের মঙ্গল। আদারওয়াইজ আমি মনে করি যে আমাদের সামনে কিন্তু একটা অত্যন্ত নাজুক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।