চার বছর আগে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) একটি অনুষ্ঠানে (ওয়েবিনার) বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপ-উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের উপস্থিত থাকা নিয়ে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ছবিটি শেয়ার দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, বিগত ফ্যাসিবাদ বিরোধী কর্মকাণ্ডে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের ভূমিকা কী? যার কোন ভূমিকা নেই তিনি কীভাবে ফ্যাসিস্ট সুবিধাভোগী হয়েও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন?
বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের কথা হয়। প্রচারিত ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছবিটি অনেক আগের। সে সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি (লিয়েন) নিয়ে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন। তখন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বের অংশ হিসেবে সরকারি একটি দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
যদিও ফেসবুকে কেউ কেউ এই প্রশ্নও তুলেছেন যে, তখন তো অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপ-উপাচার্য। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক পদে থাকা কারো পক্ষে কি এ ধরনের সরকারি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ না করার সুযোগ আছে? এরপর যদি আবার তারই বিশ্ববিদ্যালয় সেই প্রোগ্রামের আয়োজক হয়?
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির (আইইউবি) জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক ওয়াহিদুজ্জামান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সরকারের নির্দেশনায় ওই প্রোগ্রামটি আয়োজন করা হয়েছিল; সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ পদস্ত প্রায় সবাই ছিলেন।
সূত্র জানায়, তৎকালীন সময়ে শোক দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করা প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাধ্যতামূলক ছিল। শিক্ষা সরকারের নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলো ওই প্রোগ্রাম পরিচালনা করত।
জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন উপলক্ষে তার আগের দিন ১৪ আগস্ট বিকেলে একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ। সেখানে তৎকালীন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন অনলাইন আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন। সেখানে উদ্বোধানী বক্তব্য দেন তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
পেশাগত জীবনের শুরুতে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) লোকপ্রশাসন বিভাগে অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০০৬ সালে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি এই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ওই বিভাগেই অধ্যাপনায় নিয়োজিত ছিলেন।
এদিকে, ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপ-উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেয় তৎকালীন সরকার। চার বছর পূর্ণ হলে চলতি বছরের এপ্রিলে তার এই দায়িত্ব শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে গত বছরের (২০২৪ সাল) ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব নেন তিনি। পরে আগস্ট মাসের শেষের দিকে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।