Thursday, August 14, 2025

আপনাদের মেয়ে আর নেই, মধ্যরাতে শাশুড়িকে ফোনে জানিয়ে উধাও জামাই

আরও পড়ুন

রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় চার সন্তানের মা এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ওই গৃহবধূর নাম ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫)।

ওই নারী পশ্চিম শেওড়াপাড়ার শামীম সরণির ৩২২ নম্বর মেট্রো পিলারের উল্টো পাশে ৫৮৩ অনামিকা কনকর্ড অ্যাপার্টমেন্টে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকতেন।

নিহতের পরিবার ও স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সিফাত আলী (৩০) স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর কৌশলে ফোনকল করে স্বজনদের জানিয়ে পালিয়ে গেছেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে থাকা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা এইমাত্র ঘটনাস্থলে এসেছি। সরেজমিন করবো। মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে শুনেছি। মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে স্বামী পলাতক।’

আরও পড়ুনঃ  তালাক দেওয়া স্ত্রীকে ১৭ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের, তারপর...

নিহত নারীর ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, বুধবার দিনগত রাত ২টার দিকে সিফাত তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে জানান- ‘কেয়া খুবই অসুস্থ। আপনারা বাসায় আসেন।’ কী হয়েছে জানতে চাইলে সিফাত একপর্যায়ে স্বীকার করেন যে ‘কেয়া আর বেঁচে নেই’।

এরপর নাজমা বেগম স্বামীসহ দ্রুত ওই বাসায় পৌঁছান। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করলে সিফাত সেখান থেকে উধাও হয়ে যান।

পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী বাসায় ফিরে দেখেন, সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।

নিহত কেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, সিফাত খুবই বদমেজাজি। সন্তানদের সামনেই কেয়ার সঙ্গে খারাপ আচরণ ও তাকে মারধর করতো। সে নিজে কিছু করে না। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব চলছিল। তার দাবি, এরই বলি হয়েছে কেয়া।

আরও পড়ুনঃ  স্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য, একসঙ্গে নাস্তা করার পরই ৮ টুকরো করে হত্যা!

তিনি বলেন, ‘কেয়ার চার সন্তান। এক মেয়ে ও তিন ছেলে। এরমধ্যে বড় মেয়েটি ভিকারুননিসা স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন আগে কেয়া ফোন করে বলছিল, সে আর পারছে না, সংসার করবে না, একেবারে ফিরে আসতে চাইছিল। আমরাই বুঝিয়ে তাকে আটকেছি। ভুল করেছি, আজ তার খেসারত মেয়েটা দিয়ে গেলো!’

তিনি আক্ষেপ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছোট ছোট নাতি-নাতনিদের এখন কী হবে? আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। গলায় দাগ দেখেছি। সুস্থ মানুষ হঠাৎ এভাবে মারা যাবে এমনটা হতে পারে না। সিফাত কেন পালাবে?

আরও পড়ুনঃ  বাড়ি ফেরার সময় বাবা-ছেলেকে এলোপাতাড়ি গুলির পর কোপানো হলো দা দিয়ে

ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সিফাতের বাবা দীর্ঘদিন ধরে হংকংয়ে থাকেন এবং সিফাতের মা অনেক আগেই মারা গেছেন।

মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাত রোমান জানান, গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর খবরে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ঢামেক হাসপাতাল মর্গে আছে। সেখানে সুরতহাল করা হবে।

এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা এখনো স্পষ্ট নয়। সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও ঘটনার পুলিশি তদন্তে মৃত্যুরহস্য স্পষ্ট হবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি সাজ্জাদ।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ