কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সরকারিভাবে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্প হস্তান্তরের আগেই ৫ বাসার ১টি ব্যারাক দখলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য আশ্রয়ণের ঘর দখলে নেন বলে ওই বিএনপি নেতা জানান।
উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের মধ্য কড়াইবরিশাল আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকটি দখলে নিয়ে মাঝখানের দেয়াল ভেঙে চারটি কক্ষকে দুইটি কক্ষে পরিণত করে সামনে নিজ খেয়াল খুশিমতো ঘর তুলে দখলে নিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত ওই নেতার নাম ওবায়দুল ইসলাম। তিনি নিজেকে চিলমারী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব পরিচয় দেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রায় ৫ বছর আগে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তত্ত্বাবধানে মধ্য কড়াইবরিশাল আশ্রয়ণ প্রকল্পটিতে মাটি ভরাট করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পে প্রতি ৫ পরিবারের জন্য একটি করে ব্যারাক হিসেবে ১৭৫টি পরিবারের জন্য ৩৫টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। ব্যারাকগুলো নির্মাণের পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি সেগুলো সুবিধাভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়নি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকগুলো হস্তান্তরের আগেই অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ওবায়দুল ইসলামসহ অনেকে।
সরেজমিন মধ্য করাইবরিশাল আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ৫ পরিবারের জন্য নির্মিত একটি ব্যারাক অবৈধভাবে দখলে নিয়ে মাঝখানের দেয়াল ভেঙে দিয়ে নিজের মতো বাড়ি তৈরি করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ওবায়দুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন, দলীয় প্রভাবেই এ কাজ করেছেন তিনি। এছাড়াও সুজাত ইসলাম ৫ বাসার ১টি ব্যারাক, ইউসুফ আলী ২টি বাসা ও সাদেক মিয়া ২টি বাসা অবৈধভাবে দখল করে ঘিরে নেওয়ার চিত্র চোখে পড়ে।
৫ বাসার একটি ব্যারাক দখলে নেওয়া সুজাত ইসলাম বলেন, আমাদের থাকার জায়গা নাই। তাই আমরা ১টি ব্যারাক নিয়েছি, মানুষ এলে ছেড়ে দেব।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা ওবায়দুল ইসলাম নিজেকে চিলমারী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য এই ব্যারাকটি নিয়েছেন।
কক্ষের দেয়াল ভেঙে ফেলার কথা স্বীকার করে তিনি জানান, পাঁচ-সাত দিন হয়েছে দেয়াল ভাঙা হয়েছে। তবে দেয়াল ভাঙার বিষয়টি ভুল করেছেন বলে জানান ওই বিএনপি নেতা।
ইউপি সদস্য এরশাদুল হক বলেন, এখনো আশ্রয়ণ ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়নি। এরই মধ্যে সব দখল করা শেষ। আর ওবায়দুল যে কাজটা করছেন এটা মোটেও ঠিক হয়নি। তিনি এভাবে ঘরের দেয়াল ভাঙতে পারেন না। এ সময় তিনি আশ্রয়ণ ব্যারাকগুলো দ্রুত হস্তান্তরের জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পটি হস্তান্তর করা হয়নি। এছাড়াও কেউ ঘর দখল করে চারদিক ঘেরার সুযোগ নেই। কেউ যদি দেয়াল ভেঙে ফেলে সেটি তিনি এককভাবে করেছেন। আমরা কাউকে অনুমতি দেইনি।
ওবায়দুল ইসলাম বিএনপি করে বিষয়টি নিশ্চিত করে চিলমারী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আবু হানিফা জানান, কেউ অন্যায় করে থাকলে তার শাস্তি হবে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান, বিষয়টি জানা ছিল না, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।