Friday, August 15, 2025

৬ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় শিক্ষকনেতাকে বিএনপির কার্যালয়ে আটকে মারধর

আরও পড়ুন

৬ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ভোলার চরফ্যাশনে মাওলানা রুহুল আমিন নামের এক মাদ্রাসাশিক্ষককে বিএনপির অফিসে আটকে মারধরের পর সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আহত ওই শিক্ষক বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি চিকিৎসাধীন।

ঘটনাটি ৩ আগস্ট উপজেলার দুলারহাটে ঘটলেও আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) হাসপাতালে ভুক্তভোগী এসব তথ্য জানান।

এর আগে গত সোমবার (১২ আগস্ট) ভুক্তভোগী বাদী হয়ে মো. জাহাঙ্গীর নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা করেন। জাহাঙ্গীর স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানান উপজেলার নুরাবাদ ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির নেতা মো. কবির কমান্ডার।

রুহুল আমিন চরফ্যাশন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক এবং উপজেলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।

আরও পড়ুনঃ  মাদরাসার টয়লেটে ঝুলছিল শিক্ষার্থীর মরদেহ, অতঃপর..

অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ৩ আগস্ট রাত ৮টার দিকে রুহুল আমিন অন্য ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করতে দুলারহাট বাজারে যান। সেখানে শিক্ষকদের নিয়ে আবদুল্লাহ হোটেলে চা খাওয়ার জন্য বসলে বিএনপির নেতা জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে কয়েকজন তাঁকে বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর বহু টাকা আয় করেছ। এখন আমাদের ৬ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে।’ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে হোটেল থেকে টেনে বের করে লোহার রড দিয়ে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন তাঁরা।

জানতে চাইলে মাওলানা রুহুল আমিন বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে দুলারহাট স্থানীয় বিএনপির অফিসে নিয়ে আমাকে আটকে রেখে আবারও পিটিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখে এবং হত্যার হুমকি দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় করে। আমার কাছ থেকে ৩টি অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাত অনুমান সাড়ে ৩টার দিকে ছেড়ে দেয়। তাদের মারধরে গুরুতর অসুস্থ হলে স্থানীয়রা আমাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন।’

আরও পড়ুনঃ  থানায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ওসিসহ আহত ২৩

রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘আমি এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। বিষয়টি রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষক সমিতির নেতাদের জানিয়ে আদালতে মামলা করি। আমাকে মারধর ও অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, আমি জাহাঙ্গীরের কঠিন বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

‎অন্যদিকে অভিযুক্ত মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এলাকায় কয়েকটি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত, নবায়নসহ বিভিন্ন অজুহাতে ৬ লাখ টাকা নিয়েছেন মাওলানা রুহুল আমিন। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত এবং নবায়ন করতে পারেননি।’ তাই তাঁর কাছে টাকা ফেরত চাই। সেই টাকা দিই, দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকেন। ৩ আগস্ট দুলারহাট বাজারে তাঁকে পেলে টাকা দেবেন বলে স্বীকারোক্তি দেন এবং তার পরদিন টাকা দেবেন বলে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও দেন তিনি। যেহেতু তিনি আদালতে মামলা করেছেন, তার জবাব আমি আদালতে দেব।’

আরও পড়ুনঃ  ‘আপনাদের তো অনেক টাকা দেওয়ার কথা, পান নাই’ শুনতে হলো নিহতের স্ত্রীকে

‎‎এ বিষয়ে দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ ইফতেখার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। মাওলানা রুহুল আমিন থানায় অভিযোগ করেননি। যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ