বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করেছেন বলে এক অডিও রেকর্ডে শোনা গেছে। সেখানে ছাত্রদলের কমিটিতে পদবঞ্চিতদের সাথে আলোচনাকালে জাকসু প্রসঙ্গ আসলে নাসিরকে বলতে শোনা গেছে, ‘কোন জাকসু হবে না, বালের জাকসু’।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, জাকসু’র বিষয়ে যেকোনো কথা উঠলেই নাসির বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। একপর্যায়ে গালি দিয়ে এই মন্তব্য করেন। রবিবার (১৭ আগস্ট) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা ও বেগম খালেদা জিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। সে উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন বলে জানান নেতাকর্মীরা।
এর আগে ছাত্রদলের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্ধিত কমিটি ও হল কমিটি দেয়ার পর থেকেই শীর্ষ ৫ নেতাকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়নি ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা। তাদের কয়েকজন জানান, মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার শীর্ষ ৫ নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানোর জন্যই কেন্দ্রীয় নেতারা এসেছেন। তবে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তাদেরকে নিয়ে প্রবেশ করলেই পদবঞ্চিতরা ধাওয়া দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে বাকবিতন্ডা থেকে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। এর কিছুক্ষণ পরে পদবঞ্চিতরা জাবি ছাত্রদলের শীর্ষ ৫ নেতৃবৃন্দকে বের করে দিয়ে কেন্দ্রের সাথে আলোচনায় বসে। দীর্ঘ আলোচনার মাঝে জাকসু প্রসঙ্গ আসলে এরুপ মন্তব্য করেন তিনি। ফলে সৃষ্টি হয় বিতর্কের।
আলোচনার সময় তাদেরকে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তোমরা অনেক অন্যায় করেছো, আমি বলার পরও তোমরা একসাথে মিলাদ পড় নাই। আমদের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানকে বলব আপনারা কেমন আচারণ করেছেন। আপনাদের অভিযোগের বিষয়ে আমরা তদন্ত কমিটি করব। কেউ যদি অন্যায় করে সে শান্তি পাবে, সভাপতি হোক কিংবা সেক্রেটারি হোক। তার মানে এই নয় যে তোমরাও অন্যায় করে পার পাবা। এক পর্যায়ে জাকসুর কথা উঠলে তিনি বলেন, জাকসুই হবে না, বলের জাকসু।
এবিষয়ে জানতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি সাড়া দেননি। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ছাত্রদলের কোন্দলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করছে জাকসু বানচালের জন্যই তারা এমনটা করছে। পাশাপাশি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের এমন মন্তব্য শিক্ষার্থীদের সেই আশঙ্কাকে যেন বাস্তব রুপ দিল বলে জানান অনেকেই।
এই বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মহিবুর রহমান মুহিব বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা জাকসু নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হউক। কোন কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে পেছাবে না জাকসু। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান থাকবে, শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেবে।
উল্লেখ্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয় গত ১০ আগস্ট। এতে নির্বাচনের তারিখ দেয়া হয় ১১ সেপ্টেম্বর।