নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জামায়াত ও ছাত্র শিবিরের সাত নেতাকর্মী হত্যা মামলায় বসুরহাট পৌরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম মানিককে (৫৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে আসামিকে নোয়াখালী চিপ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বসুরহাট পৌরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের খাল বেপারী বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মানিক একই বাড়ির আবুল কালামের ছেলে এবং বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত ছিল।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মানিক কোম্পানীগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের সাত নেতাকর্মী হত্যা মামলার আসামি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বসুরহাট পৌরসভা জামাতের আমির মোশারফ হোসেন আমার দেশকে জানান, ২০১৩ সালে ১৪ ডিসেম্বর আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করার প্রতিবাদে বসুরহাটে জামায়াত বিক্ষোভ মিছিল করে। আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। ওই সময় আমাদের সাতজন ভাই শাহাদাত বরণ করেন। পুলিশ আমাদের চারজন ভাইয়ের পোস্টমর্টেম ছাড়া দাফন করতে বাধ্য করে। বাকি তিনজনকে মিডিয়ার মুখোমুখি হওয়ায় পোস্ট মর্টেম করতে বাধ্য হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ উল্টো জামাতের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যাদের পোস্টমর্টেম করা হয়নি ৫ আগস্টের পর তাদের পরিবার শঙ্কাবদ্ধ হয়ে মামলা দায়ের করেন। এই হত্যার ঘটনায় নিহত জামায়াত কর্মী সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মো. আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
পরবর্তীতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জামায়াতের নেতাকর্মী হত্যার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু করা হয়।
এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস ও উক্যসিং মারমাকে মামলায় আসামি করা হয়।
নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমির ইসহাক খন্দকার অভিযোগ করেন, ৫ আগস্ট এর পরে শহীদ পরিবার কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পরবর্তীতে আদালতে মামলা করলে পুলিশ এফআইআর কাটতেও ঘড়িমসি করে। পরবর্তীতে লাশ উত্তোলন করলে কবরে লাশের সাথে বুলেট পাওয়া যায়। মামলার আসামিদের আরো অনেক আগেই গ্রেপ্তার হওয়ার কথা ছিল। সকল আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনার এবং শহীদ পরিবারদের রাষ্ট্র থেকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানাই।