ইরানের দীর্ঘতম এবং একমাত্র নৌযান চলাচলের উপযোগী নদী কারুন মারাত্মক সংকটে পড়েছে। খরা, প্রবাহ হ্রাস, রাসায়নিক দূষণ এবং জলাভূমির ক্ষয়ের কারণে নদীটির বড় অংশ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কারুন-৩, কারুন-৪ ও গোতভান্দ বাঁধ নির্মাণের কারণে জলবিদ্যুতের মূল উৎস এই নদীর পানির স্তর ভয়াবহভাবে নেমে গেছে। বহুদিন ধরেই ইরানের বাঁধ নির্মাণ নীতি ‘অস্থিতিশীল’ ও স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক স্বার্থনির্ভর বলে সমালোচিত হয়ে আসছে।
খুজেস্তান প্রদেশ, যেখানে কারুন প্রবাহিত, তা আখ চাষের প্রধান কেন্দ্র। কিন্তু আধা-শুষ্ক জলবায়ুতে ৮০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আখ চাষ পানি সংকটকে আরও তীব্র করছে। বিশেষজ্ঞরা একে কারুন অববাহিকার সবচেয়ে বড় পরিকল্পনাগত ভুল বলছেন।
পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে দূষিত পরিবেশ। সম্প্রতি ইরানের এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং সিস্টেম খুজেস্তানের বিভিন্ন শহরে অস্বাস্থ্যকর (লাল সতর্কতা স্তর) রেকর্ড করেছে। আহভাজে সূচক ছিল ১৬৮, হেন্দিজানে ১৬৭ এবং অন্যান্য শহরেও ছিল ১৫০–১৬০ এর মধ্যে—যেখানে নিরাপদ মাত্রা ৫০ এর নিচে।
পরিবেশবিদ মনসুর সোহরাবি বলেন, “দেশের অব্যবস্থাপনা পরিস্থিতিকে ত্বরান্বিত করছে। সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে আজ এ পর্যায়ে আসত না।”
গত এক বছরে ইরানে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বৃষ্টিপাত কমেছে প্রায় ৪৫%। ফলে মরুকরণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
প্রায় ৯৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ কারুন নদী জাগ্রোস পর্বতমালা থেকে খুজেস্তান হয়ে পারস্য উপসাগরে গিয়ে মিশেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরানকে বাঁচাতে হলে এই নদীকেও টিকিয়ে রাখতে হবে।