Wednesday, August 27, 2025

কোরআনে আগুন দিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে রিপাবলিকান রাজনীতিক

আরও পড়ুন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক ও টেক্সাসের রিপাবলিকান কংগ্রেসনাল প্রার্থী ভ্যালেন্টিনা গোমেজ ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন পুড়িয়েছেন এবং পোড়ানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ শেয়ার করেছেন। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।

ভ্যালেন্টিনা ২০২৬ সালে টেক্সাসের ৩১তম কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের জন্য রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইসলামবিদ্বেষ মন্তব্যের জন্য পরিচিত এই রাজনীতিক আজ মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এক্স-এ একটি পোস্ট করেন।

তাতে দেখা যায়, গোমেজ একটি ফায়ার গান ব্যবহার করে কোরআনে আগুন দিচ্ছেন। পাশাপাশি তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি টেক্সাসে ইসলামকে শেষ করে দেব, হে ঈশ্বর আমাকে সাহায্য করুন। খ্রিষ্টান দেশগুলো দখল করতে মুসলিমরা ধর্ষণ ও হত্যা করছে।’

কোরআন পোড়ানোর সময় দর্শকদের রাজনৈতিকভাবে তাকে সমর্থন করার আহ্বান জানান গোমেজ। বলেন, ‘আমাকে সংসদে পৌঁছাতে সাহায্য করুন, যাতে আপনাদের কখনও মুসলিমদের ছোড়া পাথরের মুখোমুখি না হতে হয়।’

আরও পড়ুনঃ  ‘বাড়ির সবাইকে বলেছিলাম দ্রুত সরে যেতে, ফিরে দেখি কিছুই নেই’

ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর রাজনৈতিক নেতা, ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নিন্দার ঝড় ওঠে। আসন্ন নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিস্তার নিয়ে নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

গোমেজের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এর আগেও আলোচনায় আসে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি নিউ ইয়র্কে একটি বিক্ষোভে অংশ নেন, যেখানে অভিবাসীর প্রতীক হিসেবে স্থাপন করা একটি ডামিকে গুলি করেন। ওই সময় তিনি সহিংস অপরাধে অভিযুক্ত অভিবাসীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার আহ্বান জানান।

সেই ভিডিও ব্যাপক সমালোচিত হয় এবং পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়। পরবর্তীতে তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও নিষিদ্ধ করা হয়। প্রতিক্রিয়ায় গোমেজ দাবি করেন, ‘আমার ভিডিও অপসারণ এবং অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা প্রমাণ করে যে আমি ক্ষমতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি, কারণ আমি যা দেখি তাই বলি।’

আরও পড়ুনঃ  আপৎকালীন সময়ে বিমান থেকে ইজেক্ট করার পর পাইলটের সঙ্গে যা হয়

গোমেজ আরও একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে তাকে এলজিবিটিকিউ+ বিষয়ক বই পোড়াতে দেখা যায়। তিনি দাবি করেছিলেন, এসব বই শিশুদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে এসব পদক্ষেপ তার নির্বাচনি সমর্থন বাড়াতে ব্যর্থ হয়। রিপাবলিকান প্রাইমারিতে তিনি মাত্র ৭.৪ শতাংশ ভোট পান এবং ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করেন।

পরাজয়ের পরও তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় রয়েছেন এবং তার রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করছেন। উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ মানচিত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত

ভ্যালেন্টিনা গোমেজ পেশায় একজন রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগকারী ও অর্থদাতা। ১৯৯৯ সালের ৮ মে কলম্বিয়ার মেডেলিনে জন্ম নেয়া গোমেজ ২০০৯ সালে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। পরে নিউ জার্সিতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

তিনি সেন্ট্রাল কানেকটিকাট স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করেন এবং ২০২০ সালে এমবিএ সম্পন্ন করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি একজন দক্ষ সাঁতারুও ছিলেন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কলম্বিয়ার জাতীয় সাঁতার দলের সদস্য হিসেবে প্রতিযোগিতা করেছেন।

গোমেজের রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ২০২৪ সালে, যখন তিনি মিসৌরির সেক্রেটারি অব স্টেট পদে প্রার্থী হন। তখন থেকেই তার কার্যক্রম প্রায়শই বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তার স্পষ্টবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য তাকে ধারাবাহিকভাবে জনমতের কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ