Thursday, August 28, 2025

‘সপ্তাহ খানেকের জন্য আমার চোখে আলো ফিরিয়ে দেওয়া যায়, মাকে দেখব’

আরও পড়ুন

জুলাই আন্দোলনের সামনের সারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী দুই চোখ হারানো এক জুলাই যোদ্ধা ও কোরআনের হাফেজের এক গল্প শুনিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তার কান্নাজড়িত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি দেখে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছেন।

সম্প্রতি এক বেসরকারি টেলিভিশনের এক পডকাস্ট অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এ গল্প শোনান। এছাড়া, এ অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলন, বর্তমান সময় ও ভবিষ্যতের বিভিন্ন পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করেন হাদি।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, শরিফ ওসমান হাদী বলছেন, জুলাই আন্দোলনে শহীদ বেওয়ারিস কত লাশ আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। আমি জানি, আমরা একসময় সঙ্গীহীন হয়ে যাব। সঙ্গে কেউ থাকবে না। কিন্তু এতগুলো মানুষের জীবন, চিরতরে অন্ধ, পঙ্গু…।

আরও পড়ুনঃ  মেয়েকে খুন করে নিজেই মামলা করতে গেলেন বাবা, অতঃপর...

তিনি বলেন, আমি অনেকবার একটা গল্প বলেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হচ্ছি। টিআরটি ওয়ার্ল্ড আহত এক জুলাই যোদ্ধার ইন্টারভিউ নেবে। কোরআনের হাফেজ ছেলেটা। ২১ বা ২২ বছর বয়স হবে। দুই চোখ চিরতরে হারিয়েছে। আমাকে দেখে উনারা (টিআরটি ওয়ার্ল্ড) আমার সাথে কথা বলছেন। এমন সময়, ছেলেটা আমার কথা শুনে বুঝেছে যে, আমি এসেছি।

হাদী বলেন, ছেলেটা আমার কাধে হাত রেখে বলল, ‘হাদী ভাই, সপ্তাহ খানেকের জন্য আমার একটা চোখে একটু আলো ফিরিয়ে দেওয়া যায়?’

আরও পড়ুনঃ  ‘ফকিন্নির বাচ্চা’ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন রুমিন ফারহানা

একথা বলেই হাদী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আমি ছেলেটাকে বললাম, ভাই এক সপ্তাহের জন্য কেন?’ তখন সে বলল, ‘ভাই, আমার মাকে অন্তত একবার দেখতে চাই। আন্দোলনে যেতে আমার মা অনেকবার নিষেধ করেছিল। ফিরে আসার সময় আমি মাকে দেখিনি। একটাবার মন চায়, আমার মাকে একটু দেখি।’

এরপর হাদী বলেন, অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে বিদেশ চলে গেছে। একথা বলেই বাধভাঙা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বেশকিছুক্ষণ কাঁদতেই থাকেন।

আরও পড়ুনঃ  গোপালগঞ্জের সমাবেশস্থলে ছাত্রলীগের হামলা-ভাঙচুর

হাদির এসব মন্তব্য সংবলিত এক মিনিটের একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে নোমান হাবীব নামে একজন লেখেন, যেখানে চারদিক স্বার্থের প্রতিযোগিতায় ভরপুর, সেখানে হাদী ভাই থেকে গেছেন স্বার্থহীন এক নির্মল প্রদীপ। অন্যের দুঃখ-কষ্ট নিজের অশ্রু দিয়ে ভিজিয়ে নেওয়াই তার মহত্ত্ব—তিনি যেন মানবতার প্রকৃত ব্যাখ্যা নিজের অন্তরে ধারণ করে চলেছেন। যখন সবাই নিজ নিজ হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত, তখন তিনি নিঃস্বার্থ জুলাই আন্দোলনের উত্তরসূরি হয়ে সমাজকে আলোর পথে ডেকে চলছেন। এমন মানুষদের কারণেই মানবতা আজও বেঁচে আছে। আল্লাহ তাকে উত্তম বিনিময় দান করুন। আমিন।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ