ভারতের সংবাদমাধ্যম নর্থ ইস্ট নিউজ ইন্ডিয়া শেখ হাসিনা সরকারের পতন নিয়ে নতুন এক চাঞ্চল্যকর বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। অভ্যুত্থানের এক বছর পর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের শেষ দিনগুলোতে আওয়ামী লীগের ভেতরে তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি রহস্যজনক ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা শেষ পর্যন্ত সরকারের পতনে সহায়ক হয়।
সাংবাদিক চন্দন নন্দীর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়—শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত মার্কিন “ডিপ স্টেটের” প্রভাবে পরিচালিত হচ্ছিলেন। তাদের পদক্ষেপই ছিল আওয়ামী লীগের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনে এই তিনজনের ‘অস্বাভাবিক কার্যক্রম’ বড় ভূমিকা রাখে। আরাফাত হঠাৎ বিদেশে চলে যান বলে অনেকে মনে করেন, যদিও তার অবস্থান আজও অজানা। অপরদিকে, সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হকের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত সরকারের স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়েছিল।
এক সাবেক মন্ত্রীর বরাতে নর্থ ইস্ট নিউজ জানিয়েছে, ‘দরবেশ’ খ্যাত সালমান এফ রহমান নিয়মিত মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতেন। মার্কিন সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের সঙ্গে তার বৈঠক নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। প্রতিবেদনে বলা হয়, কমপক্ষে ছয়জন মার্কিন কর্মকর্তা নিয়মিত তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালে ভারতের একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সতর্ক করেছিল—বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস শেখ হাসিনা সরকারকে উৎখাতের পরিকল্পনার অংশ ছিলেন।
এছাড়া ২০২৩ সালের জাপান-আমেরিকা সফরের সময় শেখ হাসিনা রিটজ কার্লটন হোটেলে অবস্থান করলেও সালমান এফ রহমান অন্য হোটেলে উঠেন এবং সেখানে বার্নিকাটের সঙ্গে তার বৈঠক হয় বলে অভিযোগ।
এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আরাফাতের সেই মন্তব্য—“সরকারের কাছে যথেষ্ট বুলেট আছে”—শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে আরও উসকে দিয়েছিল। এটি নিছক ভুল নয়, বরং সচেতনভাবেই বলা হয়েছিল বলে মনে করেন তিনি।
আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে আওয়ামী লীগের বিশাল সমাবেশ বাতিলের সিদ্ধান্তও রহস্যজনকভাবে নেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ রেহানা সরাসরি হস্তক্ষেপ করে কর্মসূচি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এতে সরকার সমর্থকদের পাল্টা প্রতিক্রিয়ার সুযোগ হারায়।
নর্থ ইস্ট নিউজ আরও দাবি করেছে, শেখ হাসিনার ব্যর্থ চীন সফর ও ভারতের অসন্তোষও সরকারের পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল। এক নেতা বলেন, দলের এখনকার ক্ষোভের মূল কারণ হলো—শেখ হাসিনা শেষ সময়ে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের নতুন দাবি
সুএে: জনকণ্ঠ