সন্তানরা সব সময় বাবা-মা এর কাছ থেকেই লাভ করেন নৈতিক শিক্ষা। বাবা-মা এর আচার আচরণ আর স্বভাবের ৮০% সন্তানের মধ্যে বিদ্যমান থাকে এমনটিই বলে বিজ্ঞান। তবে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা পুত্র জয় যেনো সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করতে বসেছেন। তার মধ্যে যে মা এর গুন চলে গেছে ১০০ তে ১০০ শতাংশ। কথায় আছে না ‘চোরের মা এর বড় গলা’? এখানে যেনো কথাটা একটু খানি বিপরীত হবে, ‘চোরের ছেলের বড় গলা।’ মা হাসিনা এই দিকে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সরাসরি গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে যার অডিও বার্তার প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি। এবার ফ্যাসিস্ট হাসিনার উগ্র ছেলে জয় এই বিষয়টি নিয়েই উদ্ভট মন্তব্য করে বসেছেন।
জয় বলে কি না এটা অন্য প্রেক্ষাপটের অডিও, যা চরম হাস্যকর। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘বিবিসিতে প্রচারিত অডিও রেকর্ড হলো ২০১৬ সালের ১লা জুলাইয়ের। সেদিন গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে জঙ্গি দমনের অপারেশন থান্ডার বোল্ট পরিচালিত হয়েছিল। ২০১৬ সালের জঙ্গি দমনের নির্দেশনাকে বিশ্ববাটপার ইউনুস গং ২০২৪ সালের অডিও হিসেবে বিবিসি-কে গলাধ:করণ করিয়েছে। বিবিসির জন্য লজ্জা।’
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমটিকে জড়িয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে নিয়েও বাজে মন্তব্য করেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা পুত্র। যদিও জয়ের সেই পোস্ট বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে। মা হাসিনা যেমন ১৪০০ মানুষকে হত্যা করে চোরের মত লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। জয়ও তেমনি নিমিষেই পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছেন। এরপর নতুন করে আবার গত রাতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন যেখানে তার কথায় ভিন্ন সুর লক্ষ্য করা যায়।
এবার তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘বিবিসি তাদের প্রতিবেদন থেকে যেসব প্রমাণ বাদ দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা কেবল নিরস্ত্র ছাত্রই ছিল না। তাদের ভেতরে সশস্ত্র জঙ্গিরা অনুপ্রবেশ করেছিল যারা অনেক পুলিশ সদস্যকে আক্রমণ করে হত্যা করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের একটি ছোট অংশও প্রসঙ্গের বাইরে নেওয়া হয়েছিল।’
এ যেনো পুরোপুরি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত অবস্থা। বাংলাদেশের আমপাবলিক খুব ভালো করেই জানে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় পুলিশ ছাড়া যেসব ব্যক্তিদের অস্ত্র হাতে দেখা গেছে তারা হাসিনার পোষা মানুষ নামধারী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। হাসিনার পা চাটা সবচেয়ে বড় চামচা ওবায়দুল কাদেরের প্রকাশ্য নির্দেশে অস্ত্র হাতে রাস্তায় নেমেছিলো ছাত্রলীগ নামধারী সেই হায়েনার দল।
নির্বিচারে নিরীহ নিরস্ত্র জনসাধারণের ওপর মুহুর্মুহু গুলি চালায় এসব অস্ত্রধারী কুলাঙ্গারেরা। তৎকালীন হাসিনার নিয়ন্ত্রণাধীন পুলিশ-র্যাবের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমে পড়ে ছাত্র-জনতার কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে। আর আজ হাসিনা পুত্র সেই অস্ত্রধারী ছাত্রলীগের ভিডিও পোষ্ট করে কি না বলছে এরা জঙ্গি। জয়ের এমন উদ্ভট কর্মকাণ্ডে রীতিমতো সামাজিক মাধ্যম ছেয়ে গেছে হাস্যরসে। হাসিনার সাড়ে হাজার খ্যাত পুত্রকে নিয়ে ট্রলের বন্যায় মেতেছেন নেট নাগরিকরা।
অরুণা অরা নামের একজন ফেসবুকে জয়ের সেই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে লিখেছেন, ‘মা-ছেলে দুইটাই বড় মাপের বাটপার। পোস্ট করে তা আবার ডিলিট করেছে। হাস্যকর! নির্লজ্জ বেহায়া অমানুষের দল, বাঙালীদের কি মনে হয়? এত দেশপ্রেম তো তোমার মা চোরের মত লেজ গুটিয়ে পালিয়েছিলো কেন? আর তুমিই বা আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়ে সেখানে বসে আছো কেন? লাউড এন্ড ক্লিয়ার, ২৪ এর হত্যাকাণ্ডের জন্য সম্পূর্ণ দায়ী হাসিনা আর তার পরিবার। বিবিসির প্রকাশ করা কল রেকর্ডও ১০০% সত্য তা সবাই জানে আর বোঝে।’
প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া জয়ের এমন উদ্ভট আচরণ সম্পর্কে লিখেছেন, ‘আইটি নিয়ে তো খুব গর্ব আপনার আইটি কি বোঝেন? বুঝলে কি আর পোস্ট করে আবার ডিলিট করতেন? হা হা হা! স্ক্রিনশট নিয়ে নিয়েছি। এভাবে চুরি করাটাও তো মায়ের কাছেই শিখেছেন। বিবিসি যা তুলে ধরেছে তার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমটির প্রতি কৃতজ্ঞ। তুমি আর তোমার ফ্যাসিস্ট মা খুনি হাসিনার কথা আমরা আর বিশ্বাস করি না। তোমরা বিশ্বাসঘাতক বেঈমান অকৃতজ্ঞ।’
ডা. ফারজান ইয়াসমিন নামের আরেকজন ফেসবুকে জয়ের এমন উল্টো পাল্টা পোস্টের বিষয়ে লিখেছেন, ‘মস্ত বড় পাগল এই ব্যক্তি। পাবনা মানসিক হাসপাতালের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই উন্মাদ পাগলকে ধরে পাগলা গারদে রাখতে।’ জয়ের এসব আবোল তাবোল ফেসবুক পোষ্টে এভাবেই বাংলাদেশি নেটিজেনরা ক্ষোভ ঝাড়ছেন আর হাস্যরসে ফেটে পড়ছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা আর জয়ের প্রতি। কেউ কেউ তাকে উন্মাদ পাগলও আখ্যা দিচ্ছেন।