Sunday, July 27, 2025

‘বাবা, আম্মুকে খুঁজলে পাবা না; আমি নিজ চোখে দেখছি, আম্মু আগুনে জ্বলছে’

আরও পড়ুন

ঢাকার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনার সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আসমাউল হোসনা জায়রা। তবে চোখের সামনে আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় তার মা লামিয়া আক্তার সোনিয়ার।

গত ২১ জুলাই স্কুল ক্যাম্পাসে ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৩৪ জন নিহত হন, আহত হন অনেকেই। দুর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন লামিয়া। শেষ পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার মরদেহ শনাক্ত করে সিআইডি। ২৪ জুলাই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

আরও পড়ুনঃ  ঢাকায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, সবশেষ পরিস্থিতি জানা গেল

তবে ঘটনার পরই জাইরা বলেছিল, তার মাকে খুঁজে কোনো লাভ নেই, কারণ তিনি তার চোখের সামনে আগুনে পুড়ে গেছেন।

জায়রার বাবা আমিরুল ইসলাম জনি জানান, ঘটনার দিন তার স্ত্রী সোনিয়া স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে গিয়েছিলেন। বিমান দুর্ঘটনার আগে সোনিয়া মেয়েকে একটি ক্লাসশিট ঠিক করাতে একজন শিক্ষকের কাছে পাঠান। এরপরই ঘটে দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সোনিয়ার।

মেয়ের উদ্বৃতি দিয়ে জনি বলেন, ‘মেয়ের চোখের সামনেই মা মারা গেছে। দুই দিন আগে যখন আমরা সোনিয়াকে খোঁজাখুঁজি করি, তখন সে [জাইরা] বলে, “বাবা, আমাদের বাসায় এতো লোক আসে কেন?” আমরা যখন তাকে বলি, “এমনিতেই আসে”; তখন সে বলে, “বাবা, আমি জানি কিসের জন্য আসে। দুই দিন ধরে মনের ভিতর একটা কথা চেপে রাখছি। তুমি কষ্ট পাবা, তাই বলি না। তুমি আম্মুকে খুঁজো কেন? আম্মুকে খুঁজলে পাবা না। আমি নিজ চোখে দেখছি, আম্মু আগুনে জ্বলছে।’

আরও পড়ুনঃ  রাজধানীতে ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩ ইউনিট

ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল (২৫ জুলাই) সিআইডি ঢাকা সিএমএইচ থেকে সোনিয়ার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

সোনিয়ার বাবা বাবুল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার পর অনেক জায়গায় খুঁজেও মেয়েকে পাচ্ছিলাম না। শেষ পর্যন্ত ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে রক্ত দিই। পরে ঢাকা সিএমএইচ থেকে মেয়ের লাশ পাই। শরীর তিন-চার টুকরো হয়ে গেছে।’

পরে রাতেই ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের বাগনি বাড়ি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে সোনিয়াকে দাফন করা হয়।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ