Tuesday, July 8, 2025

‘হঠাৎ বিকট শব্দে দৌড়ে গিয়ে দেখি ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছে’

আরও পড়ুন

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পরিত্যক্ত ডেটোনেটর (এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে ইলিয়াস আলী নামে ১০ বছর বয়সী এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। শিশুটির ডান হাতের তিনটি আঙ্গুল উড়ে গেছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে ।

আহত শিশু ইলিয়াস বড়পুকুরিয়া খনির পাশে চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পূর্ব পাশে প্রাচীর ঘেঁষে রয়েছে খনির ডাম্পিং এলাকা। তারকাঁটার বেড়া দিয়ে ঘেরা সেই ডাম্পিং এলাকায় খনির বিভিন্ন বর্জ্য ফেলা হয়। কয়লা, ধাতব পদার্থসহ বিভিন্ন কিছুর সন্ধানে এলাকার লোকজন ওই ডাম্পিং এলাকায় প্রবেশ করে। খনির ওই বর্জ্যের ভেতরে পাওয়া বিভিন্ন কিছু কুড়িয়ে নিয়ে তা বিক্রি করে।

আরও পড়ুনঃ  ব্রেকিং নিউজ: হঠাৎ যে কারণে ১৪৪ ধারা জারি!

মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিশু বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি এলাকার ডাম্পিং এলাকা থেকে একটি ধাতব বস্তু পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইলের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ দিলে হঠাৎ বিকট শব্দে সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে তার ডান হাতের তিনটি আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত অবস্থায় তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

আরও পড়ুনঃ  কী কারণে পরিবারসহ বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হলেন কুমিল্লার সেই নারী

আহত শিশু ইলিয়াসের বাবা আশরাফুল ইসলাম জানান, খনির পাশ থেকে একটি ধাতব পদার্থ কুড়িয়ে এনে বাড়িতে খেলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখেন ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কতরাচ্ছে। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার জানান, এই ডেটোনেটরগুলো কয়লা উত্তোলনের রাস্তা প্রশস্ত করতে ভূগর্ভস্থ পাথর ভাঙার জন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় একসাথে ৪০ থেকে ৫০টি ডেটোনেটর থাকে। বিস্ফোরণ হওয়ার পর ভাঙা পাথর, উচ্ছিষ্ট তার, বিস্ফোরিত ডেটোনেটরসহ বিভিন্ন অংশ ডাম্পিং এরিয়ায় ফেলা হয়। সেখানে দুই/একটি অবিস্ফোরিত ডেটোনেটর থাকতে পারে। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত না সেগুলোতে ইলেকট্রিক চার্জের সংস্পর্শে আনা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত সেগুলো বিস্ফোরিত হবে না।

আরও পড়ুনঃ  ভারতীয় ট্রাকচালকের কাছে মিলল বাংলাদেশি ২০ পাসপোর্ট, ঘটনা কী?

তিনি আরও জানান, পুরো ডাম্পিং এরিয়া কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। এরপরও কেউ কেউ সেসব কাটা তার ফাঁক করে ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন কিছু নিয়ে যায়। সেখান থেকে হয়তো শিশুটি অবিস্ফোরিত ডেটোনেটর নিয়ে বাড়িতে গিয়ে ইলেকট্রিকের সংস্পর্শে দিয়েছিল। ফলে সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর আমরা সার্বক্ষণিক শিশুটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে একজন ডিজিএমকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুনঃ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ