ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত ও যুদ্ধবিরতির পরই ইরানকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে চীন- ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই প্রকাশিত এমন খবরকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং। চীন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, তারা কোনো যুদ্ধরত দেশের কাছে অস্ত্র রপ্তানি করে না।
সোমবার প্রকাশিত মিডল ইস্ট আই-এর প্রতিবেদনে একটি অজ্ঞাতনামা আরব গোয়েন্দা সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, যুদ্ধবিরতির পর চীন তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ইরানে পাঠিয়েছে এবং এর বিনিময়ে ইরান অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করেছে। যদিও কত পরিমাণ ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানো হয়েছে তা প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়নি।
এই প্রতিবেদনের জবাবে মঙ্গলবার ইসরায়েলে অবস্থিত চীনা দূতাবাস হিব্রু সংবাদপত্র ইসরায়েল হায়োমকে দেওয়া বিবৃতিতে জানায়, ‘চীন যুদ্ধরত কোনো রাষ্ট্রে অস্ত্র রপ্তানি করে না এবং দ্বৈত-ব্যবহারযোগ্য সামগ্রীর রপ্তানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চীন ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্র ও এসব অস্ত্র পরিবহনের যন্ত্রপাতির বিস্তারের বিরোধিতা করে। একই সঙ্গে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণ বাস্তবায়নে নিজেদের সক্ষমতা ক্রমাগত জোরদার করছে।
বুধবার (৯ জুলাই) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এই বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত মাসে ১২ দিনের এক সংঘাতের সূচনা হয়, যখন ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি ও বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। সংঘাতের পর কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়, যদিও উভয় দেশই নিজেদের ‘বিজয়ী’ দাবি করে।
ইসরায়েল আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, সংঘাতের পর ইরান এখন নতুন করে বড় পরিসরে ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের কৌশলে এগোচ্ছে, যার ফলে আগামী কয়েক বছরে তাদের অস্ত্রভাণ্ডার আরও বহুগুণে বাড়তে পারে।
এর আগে, ইসরায়েলের হামলার কঠোর সমালোচনা করে চীন বলেছিল, তারা মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে আগ্রহী। তবে বেইজিং সরাসরি কোনো পক্ষের সঙ্গে সামরিক জোটে জড়াতে চায় না বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।